বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১, ০৯:০৫:৫৮

একি করল পাকিস্তান বাবর আজমের ৫ রেকর্ডের দিনেও!

 একি করল পাকিস্তান বাবর আজমের ৫ রেকর্ডের দিনেও!

ক্রিকেট এক অনিশ্চয়তার খেলা, অপেক্ষা করতে হয় শেষ বল পর্যন্ত, বলা যায় না ফলাফল শেষ পর্যন্ত কী হতে পারে, কথাগুলির আবারো প্রমাণ হলো পাকিস্তাণ-ইংল্যান্ডের খেলায়।

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে দলকে টানলেন অধিনায়ক বাবর আজম। দুই মেজাজের দুই ফিফটিতে তাঁকে সঙ্গ দিলেন ইমাম-উল-হক ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইংল্যান্ডকে রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল পাকিস্তান। জেমস ভিন্সের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি ও লুইস গ্রেগরির ফিফটিতে সেই চ্যালেঞ্জে জিতে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়ল ইংল্যান্ড।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বার্মিংহ্যামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৩ উইকেটে জিতেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। পাকিস্তানের দেওয়া ৩৩২ রানের বিশাল লক্ষ্য ১২ বল হাতে রেখেই ছুঁয়ে ফেলেছে ইংল্যান্ড। এজবাস্টনে এই প্রথম তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করে জিতল কোনো দল। ১৯৯৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ২৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া ছিল আগের রেকর্ড।

দ্বিতীয় সারির দল নিয়েও তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতল ইংল্যান্ড। সঙ্গে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে পেল মূল্যবান ৩০ পয়েন্ট।

১৫৮ রানের চমৎকার ইনিংসে পাকিস্তানকে পথ দেখান বাবর। ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন রিজওয়ান। তাদের ছাপিয়ে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক ভিন্স ও গ্রেগরি। ১০২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন ভিন্স, গ্রেগরি করেন ৭৭।

ম্যাচের প্রথম ওভারে সাকিব মাহমুদকে বাউন্ডারিতে শুরু করেন ইমাম। তিন বল পর মারেন আরেকটি। ইংল্যান্ড রিভিউ নিলে ওভারের শেষ হলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হতো তরুণ এই ওপেনারকে। পঞ্চম ওভারে ফখর জামানকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মাহমুদ। আগের দুই ম্যাচে দ্রুত আউট হওয়ার বাবর ছিলেন সাবধানী, রানের খাতা খোলেন ১৫তম বলে। পাওয়ার প্লেতে সফরকারীরা তুলতে পারে কেবল ৩৫ রান।

নিজের মতো করেই খেলে যান ইমাম। মন্থর শুরুর পর ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়ান বাবর। তাদের ব্যাটে ২৪ ওভারে একশ স্পর্শ পাকিস্তানের রান। ফিফটি স্পর্শ করার পর বেশিক্ষণ টিকেননি ইমাম। ম্যাট পারকিনসনের বলে বোল্ড হয়ে থামেন এই ওপেনার। ভাঙে ১২৭ বল স্থায়ী ৯২ রানের জুটি। ৭ চারে ৭৩ বলে ৫৬ রান করেন ইমাম।

মোহাম্মদ রিজওয়ান ক্রিজে যাওয়ার পর বাড়ে পাকিস্তানের রানের গতি। বাবরের সঙ্গে ১২০ বলে গড়েন ১৭৯ রানের বিস্ফোরক জুটি। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে কোনো উইকেটেই এটি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের জুটি।

৭২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করা বাবর সেঞ্চুরিতে যান ১০৪ বলে। পরের পঞ্চাশ আসে আরো দ্রুত। আগের সেরা ১২৫ ছাড়িয়ে ১৩৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো স্পর্শ করেন দেড়শ রান। এই ইনিংস খেলার পথে বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়েন বাবর।

একনজরে দেখে নেওয়া যাক তালিকা-
১. ইনিংসের নিরিখে দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ান ডে ক্রিকেটে ১৪টি সেঞ্চুরি করেন বাবর। তিনি ৮১তম ইনিংসে ১৪ নম্বর ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন। অস্ট্রেলিয়ার মেগ ল্যানিং ৮২টি ইনিংসে ১৪তম শতরান করেন। ছেলেদের ক্রিকেটে হাসিম আমলা ৮৪টি ইনিংসে ১৪টি সেঞ্চুরি করেছিলেন।

২. ওয়ানডে ক্রিকেটে বাবর আজমের এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে তাঁর সর্বোচ্চ ব্যক্তগত ইনিংস ছিল অপরাজিত ১২৫ রানের।

৩. ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোনও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের এটাই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

৪. একদিনের ক্রিকেটে কোনও পাক অধিনায়কের খেলা এটাই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

৫. ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে ক্রিকেটে এটাই কোনো অধিনায়কের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩৩১/৯ (ইমাম ৫৬, ফখর ৬, বাবর ১৫৮, রিজওয়ান ৭৪, মাকসুদ ৮, হাসান ৪, ফাহিম ১০, শাদাব ০, শাকিল ৩*, আফ্রিদি ০, রউফ ০*; সাকিব ১০-২-৬০-৩, গ্রেগরি ৭-০-৪২-০, ওভারটন ১০-০-৬৪-০, কার্স ১০-০-৬১-৫, স্টোকস ৪-০-৩১-০, পারকিনসন ৯-০-৭০-১)।

ইংল্যান্ড: ৪৮ ওভারে ৩৩২/৭ (সল্ট ৩৭, মালান ০, ক্রলি ৩৯, ভিন্স ১০২, স্টোকস ৩২, সিম্পসন ৩, গ্রেগরি ৭৭, ওভারটন ১৮*, কার্স ১২*; আফ্রিদি ১০-০-৭৮-০, হাসান ৯-০-৬৯-১, রউফ ৯-০-৬৫-৪, ফাহিম ৬-০-৩৪-০, শাদাব ৯-০-৬১-২, সাকিল ৪-০-২০-০)।

ফল: ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী, সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ৩-০তে জয়ী ইংল্যান্ড, ম্যান অব দা ম্যাচ: জেমস ভিন্স, ম্যান অব দ সিরিজ: সাকিব মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে