মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৩, ১০:০৬:১১

এক টাইগার ক্রিকেটারের বাঁচার আকুতি! নিঃস্ব তার বাবা মা

এক টাইগার ক্রিকেটারের বাঁচার আকুতি! নিঃস্ব তার বাবা মা

স্পোর্টস ডেস্ক: পেস বোলিংয়ের দুরন্ত গতিতে, এক সময় যিনি ভড়কে দিতেন মাঠের প্রতিপক্ষকে। সেই শরিফ এখন নিজেই লড়ছেন নিজের সঙ্গে। প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গেলো চারমাস ধরে শয্যাশায়ী। একমাত্র সন্তানকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে, নিঃস্ব তার বাবা মা। তাই উদীয়মান এই টাইগার ক্রিকেটারকে বাঁচাতে বোর্ড থেকে শুরু করে সাকিব-মাশরাফীরদের কাছে আকুল আবেদন শরিফ ও তার পরিবারের।

চোখ ছলছল দৃষ্টি উদাস, শুকনো মুখে অব্যক্ত হাজারো কথা। ছোট্ট বারান্দার দাঁড়িয়ে অসীম শূন্যে অপলক চাহনি। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির শরীরে বাসা বেধেছে মরণব্যাধি। একসময়ের ফিট মাংসপেশি, এখন যেন হাড্ডিসার।

বলগুলো পড়ে আছে বড্ড অযত্নে। ছবিগুলোই দুঃসময়ের একমাত্র অবলম্বন। ধুলোর আস্তরণে ঢাকা মেডেলগুলো এখনও জোগায় অনুপ্রেরণা। জিততে হবে আরও একটা লড়াইয়ে। তবে এবার আর ২২ গজের প্রতিপক্ষ নয়।

দেশের ঘরোয়া কিংবা বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের খোঁজ যারা নিয়মিত রাখেন তাদের কাছে মোটেও অচেনা নয় শরিফ ইসলাম। খেলেছেন আফিফ-বিপ্লবদের সঙ্গে খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৫, ১৭ ও ১৯ ক্যাটাগরিতে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগের ক্রিকেটেও খেলেছেন নিয়মিত।

মাস চারেক আগে ম্যাচ খেলতে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শরিফ। পরে জানা যায় প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। যার চিকিৎসায় এখন নিঃস্ব তার পরিবার। শতকোটি টাকার বোর্ডের কাছে তাই শুধু বেঁচে থাকার আকুতি শরিফের।

সময় সংবাদকে এ ক্রিকেটার বলেন, ‘যখন চোখ বন্ধ করি, তখন শুধু বাবা-মাকে দেখতে পাই। আমি ছাড়া পরিবারে আর কেউ নেই, যে বাবা-মাকে দেখবে। আমার খুব ইচ্ছে ছিল, আমার নিজের টাকা দিয়ে বাবা-মাকে নিয়ে হজে যাব। যার কারণে সুস্থ হওয়ার আমার খুব আকাঙ্ক্ষা। আমি মানসিকভাবে সুস্থ আছি। চিকিৎসা হলে শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে যাব। মাঠে ফিরতে পারব। যদি বিসিবি আমাকে একটু দেখে বা সাকিব ভাই, তামিম ভাই, রিয়াদ ভাই, মুশফিক ভাই, মাশরাফী ভাই ওনারা যদি একটু দেখেন, তাহলে আমার চিকিৎসাটা তাড়াতাড়ি হবে। আমি বাইরে থেকে চিকিৎসা নিতে পারব।’

বড় ভাইকেও শরিফ হারিয়েছেন হঠাৎ করেই। শুক্কুর আলী সুরাইয়া দম্পতির বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন তাই শুধুই শরিফ। নিজের ছেলের জন্য সাহায্যের অনুরোধ জানিয়ে শরিফের বাবা বলেন, ‘বড় ছেলেকে দুবছর আগে হারিয়েছি।

শরিফকে নিয়ে আমার অনেক আশা। সে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে মাঠ কাঁপাবে। কিন্তু সে এখন মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। সবার কাছে আমার চাওয়া, সবাই দোয়া করেন, একটু সাহায্য সহযোগিতা করেন যেন সুস্থ হয়ে আমার ছেলে দেশের জন্য খেলতে পারে।’

বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম ধনী বোর্ডের তকমা লেপ্টে আছে বিসিসির গায়ে। শরিফদের মতো ক্রিকেটারদের জন্যই বোর্ড আজ এত দূরে। সব হারিয়ে নিঃস্ব এ ক্রিকেটারের বাঁচার আকুতি পৌঁছাবে তো তাদের কানে? নইলে হয়তো ইতিহাসের দায়মুক্তিতে বাঁধা থাকবেন তারাও।-সময়নিউজ.টিভি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে