শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩, ১০:০০:৩৪

কোনটি এবারের বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচ?

কোনটি এবারের বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচ?

স্পোর্টস ডেস্ক: ভারত বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। হয়তো এই ম্যাচটিই হবে বিশ্বকাপের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচ।

তবে এরইমধ্যে এমন ১০টি ম্যাচের অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে, যেগুলো সত্যিকার অর্থেই ক্রিকেটপ্রেমীদের বিনোদন দিয়েছে। কিছু ম্যাচ দেখার পর তো অনেক ক্রিকেটভক্ত বলেই দিয়েছেন, বিশ্বকাপের আর কোনো ম্যাচ না দেখলেও তার চলবে। কারণ, তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচটিই দেখে ফেলেছেন তারা।

এবারের বিশ্বকাপে সেরা যে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেগুলো আসর শেষ হওয়ার পরও দর্শকদের মনে দীর্ঘদিন জায়গা দখল করে রাখবে। দেখে নেওয়া যাক বিশ্বকাপের এমন সেরা ১০টি ম্যাচ-

১। আফগানিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া, মুম্বাই
ভারত বিশ্বকাপের নতুন চমক ছিল আফগানিস্তান। তিন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন- পাকিস্তান, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে তারা। সেমিফাইনালের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়ার সামনে।

পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ারও নাভিঃশ্বাস তুলে দিয়েছিল আফগানরা। ওই ম্যাচে আফগানদের দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৯১ রানেই ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

এরপরই একা এক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল অবিশ্বাস্য এবং অবিস্মরণীয় এক ইনিংস খেলে হারিয়ে দেন আফগানিস্তানকে। যদিও শুরুতে দু’বার ক্যাচ মিস হয়েছিলো তার। ওই ক্যাচ মিসই যে আফগানদের সেমির স্বপ্ন শেষ করে দেবে, তা কে জানতো! কিন্তু ম্যাক্সওয়েল আহত হয়ে শুয়ে পড়ার পরও উঠে দাঁড়িয়ে একার হাতে জিতিয়েছেন অস্ট্রেলিয়াকে।

ক্রিকেটের ইতিহাসেই অন্যতম সেরা ইনিংসটি এই ম্যাচে খেলেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে শুধুমাত্র চার আর ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতান তিনি। ক্রিকেটের ইতিহাসের সেরা ইনিংস খেলে ১২৮ বলে করেন অপরাজিত ২০১ রান। শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেটে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।

২। পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, চেন্নাই
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৭১ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল পাকিস্তান। প্রোটিয়াদের তখন যে দানবীয় ফর্ম, সে হিসেবে এই লক্ষ্য তাদের সামনে মামুলি ব্যাপার। ৪ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলে ফেলে ২০৬ রান। এরপরই মূলতঃ শুরু হয় লড়াই। পাকিস্তানের বোলাররা চেপে ধরে প্রোটিয়া ব্যাটারদের। বাকি ৫৪ রান করতে প্রোটিয়ারা হারায় আরও ৫ উইকেট। শেষ মুহূর্তে ১ উইকেট হাতে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন হয় ১১ রান। শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটেই ম্যাচটি জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকাই।

৩। অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড, ধর্মশালা
রান তাড়ার কঠিন লড়াই। নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য ৩৮৯ রান। কিন্তু কিউই ব্যাটাররা নির্ভয়, ব্যাট হাতে দুরন্ত। ওপেনার রাচিন রাবিন্দ্রা খেললেন ৮৯ বলে ১১৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। শেষ দিকে জিমি নিশামের লড়াই। তবে দিনটি নিউজিল্যান্ডের হয়ে উঠেনি। শেষ বলের লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫ রানে হেরে যায় কিউইরা।

৪। ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড( সেমিফাইনাল), মুম্বাই
নিউজিল্যান্ডকে ৩৯৮ রানের বড় লক্ষ্য দিয়েও টেনশনে পড়ে গিয়েছিল ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কারণ, কেন উইলিয়ামসন আর ড্যারিল মিচেলের ১৮১ রানের জুটি। কেন উইলিয়ামসনকে সাজঘরে ফিরিয়ে অবশেষে রোহিতের মুখে হাসি ফোটালেন পেসার মোহাম্মদ শামি।

শেষদিকে মিচেল আর ফিলিপসের জুটিতে আবারও রোহিত-কোহলিদের টেনশন। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিক ভারতই রেখে দিল ম্যাচটি। ৭০ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলো নিউজিল্যান্ডকেই। মোহাম্মদ শামি একাই নিলেন ৭ উইকেট। এর আগে ওই ম্যাচেই ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের ৫০তম সেঞ্চুরি করেন বিরাট কোহলি।

৫। দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া (সেমিফাইনাল), কলকাতা

২৪ রানে ৪ উইকেট ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার। এরপর দলের পুরো ভার নিলেন ডেভিড মিলার ও হেনরিক ক্লাসেন। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সামনে মাত্র ২১৩ রানের লক্ষ্য দিতে পারলো প্রোটিয়ারা। লক্ষ্য ছোট থাকায় চাপহীনভাবেই খেলতে থাকে অস্ট্রেলিয়া।

হঠাৎ স্পিন সহায়ক পিচে খেই হারিয়ে ফেলে অসিরা। তাবরিজ শামসির বলে সাজঘরে ফিরতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। সাথে কোয়েৎজির স্পেলও অসিদের মাঠ ছাড়তে বাধ্য করে। তবে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার পিঠে চোকার ট্যাগটি ভালোভাবে লাগিয়ে ৩ উইকেটের জয় নিয়ে ফাইনালে উঠে যায় অস্ট্রেলিয়া।

৬। দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম নেদারল্যান্ডস, ধর্মশালা

বিশ্বকাপের অঘটনের ম্যাচ। বৃষ্টিবিঘ্নিত ৪৩ ওভারের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের দেওয়া ২৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৮ রানের জয় পায় ডাচরা।

৭। নিউজিল্যান্ড বনাম পাকিস্তান, বেঙ্গালুরু

পাকিস্তানের সামনে ৪০১ রানের পাহাড় দাঁড় করিয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে কিউই বোলারদের তুলোধুনো করেন ফাখর জামান। ৮১ বলে করেন ১২৬ রান। অবশেষে বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি মাঠে না গড়ানোর কারণে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ২১ রানের জয় পায় পাকিস্তান।

৮। ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া, চেন্নাই

অস্ট্রেলিয়াকে ১৯৯ রানে অলআউট করে দেয় ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। এরপর কোহলি আর লোকেশ রাহুলের ১৬৫ রানের জুটিতে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় ভারত। অবশেষে ৬ উইকেটে জয় পায় স্বাগতিকরা।

৯। শ্রীলঙ্কা বনাম পাকিস্তান, হায়দরাবাদ
বিশ্বকাপের ইতিহাস সৃষ্টিকারী ম্যাচ। ৩৪৫ রান তাড়ায় ম্যাচ জিতে রেকর্ড গড়েছিল পাকিস্তান। এর আগে বিশ্বকাপের আসরে এত বেশি রান তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দল। ইনজুরি আক্রান্ত মোহাম্মদ রিজওয়ানের ১২১ বলে ১৩১ রান ও আব্দুল্লাহ শফিকের ১১৩ রানের সুবাদে ৬ উইকেটে জয় পায় পাকিস্তান।

১০। ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড, ধর্মশালা
ভারতকে ২৭৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯১ রানে ৫ উইকেট হারায় ভারত। শেষ দিকে রবিন্দ্র জাদেজার ৩৯ রানের সুবাদে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে