স্পোর্টস ডেস্ক: শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২ রান। শেষ ওভারে নাটকীয় ফলাফল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার খেলায়! দাসুন শানাকার করা ওভারের প্রথম বলটি ছিল ফুলটস, সেখানে ব্যাট চালিয়ে মিড অফে ধরা পড়েন রিশাদ হোসেন।
পরের বলটি নতুন ব্যাটার তাসকিনকে ওয়াইড করেন শানাকা। বৈধ দ্বিতীয় বলে এক রান নিলে স্ট্রাইক পান জাকের। তখন ৪ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১০ রান।
এমন সমীকরণের সামনে সীমানায় ধরা পড়েন জাকের। শরিফুল ইসলাম উইকেটে এসে প্রথম বলেই চার মারেন। পরের বলে আরও এক রান নিলে শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ৫ রান। কিন্তু তাসকিন ১ রানের বেশি নিতে পারেননি। শ্রীলঙ্কা জয় পায় ৩ রানের।
সোমবার (৪ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬১ রান করেছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। জবাবে খেলতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০৩ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেছেন জাকের।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় বলে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। ম্যাথিউসের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে অন সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের বারের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটকিপা্রের গ্লাভসে। ৩ বল খেলে ডাক খেয়ে সাজঘরে ফিরেছেন এই অভিজ্ঞ ওপেনার।
সুবিধা করতে পারেননি আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও। ১১ বলে ১২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। বিনুরা ফার্নান্দোকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন আসালঙ্কার হাতে। চারে নেমে ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। তবে সেটাই ইনিংসে তার প্রথম ও শেষ বাউন্ডারি। ৫ বল খেলে করেছেন ৮ রান।
শান্ত এদিন শুরু থেকেই বেশ ভুগেছেন। কোনোভাবেই নিজেকে যেন উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত তাকে আউট করে মুক্তি দিয়েছেন মাথিশা পাথিরানা। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ২০ রান।
৬৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর জাকেরকে সঙ্গে নিয়ে দলের হল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে পেয়েছেন ফিফটির দেখা। মাত্র ২৭ বলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে এরপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৫৪ রান করেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
মাহমুদউল্লাহ ফেরার পর গিয়ার পরিবর্তন করেন জাকের। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের পথে রেখেছিলেন তিনি। যতক্ষণ উইকেটে থেকেছেন বোলারদের ওপর ছড়াও হয়েই খেলেছেন। ২৫ বলে স্পর্শ করেছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার প্রথম ফিফটি। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪ বলে ৬৮ রান।
এর আগে বোলিংয়ে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই লঙ্কানদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শরিফুল। এই বাঁহাতি পেসারের করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে ছিল, সেখানে ড্রাইভ করতে যেয়ে আভিষকার ব্যাটের আউট সাইড এজে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। সহজ ক্যাচ নেন লিটন দাস। দ্বিতীয় বলে উইকেট নিয়ে শরিফুল উদযাপন করেছেন ‘টাইমড আউট’-এর ভঙ্গিতে।
তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি কামিন্দু মেন্ডিসও। ইনিংসের পঞ্চ ওভারে এই তপ অর্ডার ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ বলে ১৯ রান। ৩৭ রানে টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে হারানোর পর ঘুরে দাড়ায় লঙ্কানরা।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা মিলে যোগ করেন ৯৬ রান। ফিফটির দেখা পেয়েছেন দুই ব্যাটারই। মেন্ডিস করেছেন ৩৬ বলে ৫৯ রান। আর সামারাবিক্রমা অপরাজিত ছিলেন ৪৮ বলে ৬১ রান করে।
শেষদিকে ২১ বলে ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন চারিথ আসালঙ্কা। তাতে দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ পেয়েছে লঙ্কানরা। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন ও শরিফুল ইসলাম।