স্পোর্টস ডেস্ক : তাসকিন আহমেদের আইপিএল অনাপত্তিপত্র না দেয়ার ব্যাপারে অদ্ভূত যুক্তি বিসিবির। চারদিনের ব্যবধানে ৪ ওভার বল করায় ঝুঁকি থাকলেও, স্লো পিচ আর অসহনীয় গরমে, ১০ ওভারের স্পেল নিয়ে নির্ভার নীতিনির্ধারকরা।
যেখানে রিকভারি সেশনেই পার হয়ে যাচ্ছে ২ দিনের বিরতি। যদিও বিসিবির দাবি, ফিজিও ডিপার্টমেন্টের তত্ত্বাবধানেই আছেন ঢাকা এক্সপ্রেস। তবে ভেতরের খবর, তাসকিনের প্রতি এমন দ্বিমুখী নীতির পেছনে প্রভাব আছে আবাহনী ক্লাবের।
তাসকিনকে আইপিএল খেলার অনাপত্তি পত্র না দেয়ার ব্যাপারে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সামনে এনেছিলেন ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের বিষয়টি। । আইপিএলে তাসকিনকে না পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, 'খালি খেলালেই হবে না, প্লেয়ারকে আইপিএলে পাঠিয়ে দিলেই হবে না। আমাদের তো তার ওপরে লোডটাও দেখতে হবে।'
অথচ লোড সামলাতে ২০ ওভারের পরিবর্তে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে খেলানো হচ্ছে তাসকিনকে। বিসিবি'র এমন অদ্ভূত প্রয়াস হয়তো আপনাকে অবাক করবে। হয়তো দেশের ক্রিকেট নীতিনির্ধারকদের ক্রিকেট নিয়ে ভাবনার পরিধি কতটা সমৃদ্ধ সেটা নিয়েও নতুন করে ভাববেন।
আইপিএলে'র এনওসি পেলে কয় ম্যাচে তাসকিন একাদশে জায়গা পেতেন, সেটা তর্ক সাপেক্ষ। আর তা পেলেও চারদিনের ব্যবধানে ম্যাচে মাত্র ৪ ওভারেই স্পেল করেই শেষ হতো। পাশাপাশি দলগুলোর তারকাসমৃদ্ধ কোচিং স্টাফ আর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতায় নিজেকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারতেন ঢাকা এক্সপ্রেস। যদিও বিসিবির ভাবনা, বিদেশি ফ্র্যাঞ্জাইজি লিগে যত্ন নেয়া হয় না তেমনটা।
জালাল ইউনুস বলেন, 'আইপিএলে গেলে কিন্তু তাদের ১০০ ভাগ নিংড়ে নেওয়া হবে। সে জায়গায় যদুই মুস্তাফিজের মতো...মুস্তাফিজের যখন ইনজুরি হয়েছিল তখন কিন্তু এখান থেকে খেলে গিয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলেছিল। এই লোডটা নিতে গিয়ে কিন্তু মুস্তাফিজকে আমরা দেড় বছর পাইনি এবং সেই এফেক্টটা কিন্তু মুস্তাফিজের রয়ে গেছে এখনো। সেম অবস্থা তাসকিনেরো হোক সেটা আমরা চাইনি।
আইপিএলে অযত্নে থাকলেও, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট অপারেশন্স। যেখানে মন্থর উইকেটে প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরমে, ১০ ওভারের বোলিং স্পেল করতে হচ্ছে। পাশাপাশি ডিপিএলের প্রতি ম্যাচের আগে মাত্র দুই দিনের বিরতিতে সুযোগ থাকে না প্রস্তুতির। বরং আগের ম্যাচের ধকল কাটানোর আগেই, আরো একটি ওয়ানডে খেলতে হচ্ছে ঢাকা এক্সপ্রেসকে। বিসিবির আছে
অবশ্য খোঁড়া যুক্তি।জালাল ইউনুস বলেন, 'সে তো বলছে ভালো অনুভব করছে। আমিও তাসকিনের কাছে শুনেছি। হি ইজ ডুইং অলরাইট। আমাদের ক্রিকেট বোর্ড থেকে ফিচার ডিপার্টমেন্ট থেকে বলা আছে, এরা যারা আছে, বিশেষ করে ফাস্ট বোলাররা, তারা যদি কোনো ধরনের অস্বস্তি বোধ করেন তবে সঙ্গে সঙ্গেই যেন রিপোর্ট করা হয় এবং দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
অবশ্য আবাহনী'র খেলোয়াড় না হলে হয়তো প্রেক্ষাপটটা ভিন্ন হতো তাসকিনের জন্য। ক্রিকেট বোর্ডে ক্লাব কর্তাদের আধিপত্য কাজে লাগিয়ে, বাড়তি সুবিধা নেয় আকাশী-নীল শিবির। আইপিএল তো স্রেফ বিদেশি লিগ, জাতীয় দলের খেলার সময়েও আবাহনীর ক্রিকেটার নিয়ে বোর্ডের ভিন্ন নীতির দেখা পাওয়া যায়, প্রায় প্রতিনিয়ত। ডিপিএল জিততে মরিয়া ক্লাবটি সুপার লিগের পরিকল্পনা করছে ঢাকা এক্সপ্রেসকে নিয়েই।
আবাহনীর বোলিং কোচ রাজিন সালেহ বলেন, 'তাসকিন তো লাস্ট ম্যাচে খেলেছে। আমরা আশা করি, সে কালকের (আজ বৃহস্পতিবার) ম্যাচও খেলবে। যদি সে এ ম্যাচটা নাও খেলতে পারে, সুপার লিগে অবশ্যই খেলবে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে টানা ওয়ানডের মধ্যে থাকায় তাসকিন কিভাবে প্রস্তুতি নিবে, সেটাও হয়তো নতুন করে প্রশ্ন তুলবে।