স্পোর্টস ডেস্ক : সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দুই ওপেনারের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সামনে কার্যত চুরমার হয়ে গেছে লখনৌয়ের বোলিং ইউনিট।
১৬৬ রান তাড়া করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই স্রেফ ৫৮ বলে (৯ দশমিক ৪ ওভার) ম্যাচ শেষ করে দেন ট্রাভিস হেড ও অভিষেক শর্মা। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের অসহায় আত্মসমর্পনের দিনে দলের মালিকের তোপের মুখে পড়লেন অধিনায়ক কেএল রাহুল!
ম্যাচের পরমুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সবার সামনেই রাহুলকে বেশ উত্তেজিত হয়ে কিছু বলছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা।
রাহুলও বুঝানোর চেষ্টা করছিলেন। দুজনের মধ্যে কী কথা হয়েছে সেটি না জানা গেলেও দলের অধিনায়কের সঙ্গে এমন আচরণ ভালোভাবে নেননি সমর্থক থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যকাররাও।
কী ঘটেছিল আসলে?
ম্যাচের পরই সঞ্জীব নেমে আসেন মাঠে। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলকে হাত নেড়ে নেড়ে কিছু বোঝাতে থাকেন। তার আচরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল দলের এই হারে তিনি খুশি নন। কিছু কিছু ক্রিকেটারের দিকে হাত দেখিয়ে ইঙ্গিত করতে থাকেন সঞ্জীব। তার গলার স্বরও যে বেশ উঁচু ছিল, সেটাও বোঝা গেছে ভিডিও দেখে।
সঞ্জীবের দাপটের সামনে রাহুল কিছু বলতেই পারেননি। তিনি চুপচাপ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়েছিলেন। সঞ্জীবের কথা শুনছিলেন। পরে কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকেও বেশ কিছু কথা বলেন সঞ্জীব। সেই ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ামাত্রই সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
ক্রিকেটারের প্রতি দল মালিকের এমন আচরণে খুশি হতে পারেননি সমর্থকরা। তাদের দাবি, দলের হারে মালিকের রাগ হতেই পারে। সেটা তো ড্রেসিংরুমে ফিরেও বোঝানো যেত। মাঠের মধ্যে সবার সামনে এভাবে রাহুলকে ‘অপমান’ করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
কেউ কেউ এই ঘটনার সঙ্গে টেনে এনেছেন কেকেআর মালিক শাহরুখ খানের প্রসঙ্গ। তারা জানিয়েছেন, রাজস্থানের কাছে ঘরের মাঠে দলের হার স্টেডিয়ামে বসে দেখেছিলেন শাহরুখও। দল বা অধিনায়ককে বকাঝকার বদলে তিনি সাজঘরে গিয়ে প্রত্যেককে উৎসাহ দেন। দ্রুত হার ভুলে যেতে বলেন। সবাইকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন। কেকেআরের সাফল্যের পেছনে শাহরুখের এই অবদানের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন অনেকে।
খুশি হননি ধারাভাষ্যকারেরাও। জিয়ো সিনেমায় এক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘রুদ্ধদ্বারেই এমন আলোচনা হওয়া উচিত ছিল। এখন স্টেডিয়ামে কত ক্যামেরা থাকে। ওরা কোনও কিছুই দেখাতে ছাড়ে না। আপনি জানেন যে রাহুলকে এখন সাংবাদিক বৈঠকে যেতে হবে এবং আরও অনেক কাজ করতে হবে। তখনই আপনি ওকে এ সব বোঝাতে বসলেন!’
তবে সঞ্জীবের এমন আচরণ মোটেই নতুন নয় বলে মনে করছেন সমর্থকদের একাংশ। তারা তুলে এনেছেন বেশ কয়েক বছর আগের একটি ঘটনা, যখন রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টের মালিক ছিলেন গোয়েন্কা। চেন্নাই নির্বাসিত থাকার সময়ে পুণের হয়ে দু’বছর আইপিএলে খেলেছিলেন ধোনি। প্রথম বছর তিনিই অধিনায়ক ছিলেন।
পরের বছর তাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে সঞ্জীবের হাত ছিল বলে মনে করেন অনেকেই। ক্রিকেট জীবনে ধোনিকে সেই প্রথম এবং এখনও পর্যন্ত শেষ বার অধিনায়কত্ব থেকে সরানো হয়েছিল।