স্পোর্টস ডেস্ক : তাসকিন আহমেদ কেশভ মহারাজের ফুলটস বলে টাইমিং মেলাতে পারলেন না। বল যখন কাভার দিয়ে বৃত্তের খানিকটা বাইরে তখন টিভির স্ক্রিনে ভেসে আসে তাওহীদ হৃদয়ের মলিন মুখ। বিমর্ষ তাওহীদ যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না কিসের থেকে কি হয়ে গেল!
১১৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশক্র ১০৯ রানে আটকে গেল। ৪ রানে ম্যাচ হার। নিউ ইয়র্কে যেন ফিরে এলো সেই বেঙ্গালুরুর অভিশপ্ত রাত। কিংবা ২০১২ সালের ঢাকায় এশিয়া কাপের ফাইনালের দুঃস্মৃতি।
তীরে গিয়ে তরী ডোবানোর গল্প বাংলাদেশ ক্রিকেটে নতুন নয়। সেই তালিকায় যোগ হলো আরেকটি হৃদয় ভাঙার অধ্যায়। যে পরাজয়ে নিজেদের দায় তো আছেই সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) অদ্ভুতুড়ে নিয়মও আছে। একটি বাই চার নিয়ে আলোচনা হচ্ছে যা নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের পক্ষে আসেনি।
১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মাহমুদউল্লাহকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে তিনি বেঁচে যান। কিন্তু বল তার প্যাডে লেগে যায় বাউন্ডারিতে। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ৪ রান যোগ হওয়ার কথা। কিন্তু আম্পায়ার আউট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বল ডেড হয়ে যায়। তাতে কোনো কিছুই যোগ হয়নি বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে। ওই ৪ রান বাংলাদেশ পেলেও হয়তো এই ম্যাচ হারতে হতো না!
বাংলাদেশের এমন নাটকীয় হার এবং আইসিসির এই নিয়মের কড়া সমালোচনা হচ্ছে। সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা বলছেন, আইসিসির এই নিয়মের পরিবর্তন আনা জরুরী।
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছেন, ‘আমি মনে করি, আপনার হাতে তো সময় আছে। আপনি ২ সেকেন্ড অপেক্ষা করে দেখতে পারেন বল কোথায় যাচ্ছে। বাউন্ডারি হলো কি হলো না সেটি দেখেও আপনি সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। অন্য যা-ই হোক, ব্যাটসম্যান যদি নট আউট থাকে, তাহলে ওই বলে রান দেওয়া উচিত। ওই ৪ রান দিলে বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে যেতে পারতো।’
তামিমের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার মরনে মরকেল, ‘আমিও (তামিমের সঙ্গে) একমত। এমনটা হলে ফিল্ডাররাও বাউন্ডারি বা এক-দুই রান ঠেকাতে চেষ্টা করবে। অবশ্যই খেলাটির খাতিরে কিছু একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। আশা করি, বিশ্বকাপের পরে এটি নিয়ে ভাবা হবে।’
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও পেসার ওয়াকার ইউনুসও বাংলাদেশের পক্ষে সাফাই গাইলেন, ‘এলবিডব্লিউয়ে ডেড বলের বিতর্কিত নিয়ম নিয়ে পুনরায় ভাবা উচিত। এর কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি ছোট রানের থ্রিলার ম্যাচ হেরে গেল বাংলাদেশ।’
সমালোচনার পর আইসিসি ও এমসিসি অনেক সময়ই ক্রিকেটের নিয়মে পরিবর্তন আনে। হয়তো এটাও আনতে পারে। কিন্তু তাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস থেকে এই হারের দগদগে ক্ষত তো আর মুছে যাবে না।