স্পোর্টস ডেস্ক : সময়টা যখন বিরুদ্ধ ছিল তখন পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন খুব ক’জন মানুষ। তাদের একজন তামিম ইকবাল। ব্যাটে-বলে সাকিব বেশ বিবর্ণ ছিলেন সাম্প্রতিক সময়ে।
পারফরম্যান্সের সূচক নিচের দিকে থাকায় প্রবল সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছিলেন। দল থেকে বাদ দেওয়া, অবসর, এসব আলোচনাও শুরু হতে থাকে। কিন্তু তার ওপর বিশ্বাস ছিল খুব অল্প ক’জনেরই। তামিম তাদেরই একজন। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোতে সাকিবের ওপর বিশ্বাস রেখে তামিম বলেছিলেন, ‘আমার বিশ্বাস আছে সাকিব পারফর্ম করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে সাকিবের ব্যাটে রান এসেছে যথাক্রমে ৮ এবং ৩। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে মাঠে নেমে সাকিব ফিরে পেলেন পুরনো ছন্দ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেললেন ৪৬ বলে ৬৪ রানের ইনিংস। এই ম্যাচের আগে শেষ ১৯ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে কোনো ফিফটি আসেনি। সর্বোচ্চ রান ৩৮ অপরাজিত। সেটাও গত বছরের জুলাইয়ে। ডাচদের বিপক্ষে সাকিব পেলেন ১৩তম টি-টোয়েন্টি ফিফটির স্বাদ।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় একই ছন্দে খেলেছেন। ব্যাটিংয়ে কোনো জড়তা ছিল না। বলের মেরিট অনুযায়ী খেলেছেন। শুরু থেকেই তার ব্যাটে ছিল আগ্রাসী মনোভাব। শেষটাও করেছেন সেভাবে। ৩৮ বলে ফিফটি তুলে নেওয়া সাকিব পরের ৮ বলে যোগ করেন ১৪ রান। কোনো ছক্কা না থাকলেও ৯ চারে সাজিয়েছেন ইনিংস। তার ব্যাটে ভর করেই বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১৫৯ রান করে।
ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ইনিংসের শেষ বলে নিজের উইকেট বাঁচাতে ও বাড়তি ১ রান স্কোরবোর্ডে যে ডাইভ দিয়েছেন তাতে উত্তর পেয়ে যাওয়ার কথা। ফিল্ডারের হাতের ওপর বল দিয়ে ২ রান নেওয়ার চেষ্টায় সফল হন। ডাইভ দিয়ে সাকিব বুঝিয়েছেন, স্টিল গুড টু গো।
পুরোনো বন্ধু তামিম যে বিশ্বাস রেখেছিলেন, যে সাহস দেখিয়েছেন সাকিব তার পূর্ণ প্রতিদান দিয়েছেন সুন্দর, ঝকঝকে ইনিংসে। প্রথম দুই ম্যাচেই তার শর্ট বলে সমস্যা হচ্ছিল। চোখের সমস্যার কারণে তার মাথার পজিশনে পরিবর্তন হয়েছে। ব্যাটিংয়ে ছন্দ না পাওয়ার পেছনে সেটাও একটা কারণ। তবে আজকের ইনিংস তাকে আরও সাহস জোগাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ব্যাটিংয়ে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে সাকিব ফিরে আসার বার্তা দিয়েছেন। এবার বোলিংয়ে হাসার পালা। তাহলে বয়সের সীমানা পেরিয়ে সাকিবও যে তেজদীপ্ত হয়ে উঠতে পারেন সেই বার্তাটাও দিতে পারবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটে বহু প্রচলিত স্লোগানটা মনে আছে তো, ‘সাকিব হাসলেই হাসে বাংলাদেশ।’