স্পোর্টস ডেস্ক : আজ (মঙ্গলবার) সকালেও বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়েছে ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন (ডিএলএস) পদ্ধতিতে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ম্যাচটিতে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান।
যেখানে ডিএলএস নিয়মে আফগানরা ৮ রানে জিতে সেমিফাইনালে উঠেছে। এরপরই খবর এসেছে এক দুঃখজনক খবর– সেই ডিএলএস নিয়মের সহকারী আবিষ্কারক ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থ মারা গেছেন।
গত ২১ জুন তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো। মৃত্যুকালে ডাকওয়ার্থের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। এর আগে তার অন্যতম সহযোগী ও নিয়মটির আরেক প্রবর্তক টনি লুইস মারা যান ২০২০ সালের এপ্রিলে।
এবার আরও এক ক্রিকেটীয় আইনপ্রণেতার মৃত্যু হয়ে গেল। ওই নিয়মে আরও একজন অংশীদার আছেন, তিনি হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার পরিসংখ্যানবিদ স্টিভেন স্টার্ন। ফলে তিনজনের নাম মিলিয়ে নিয়মটি দাঁড়িয়েছে ‘ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন’ নামে।
প্রাথমিকভাবে ১৯৯৭ সালে প্রথম ডিএলএস পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় ক্রিকেট ম্যাচে। তারও আগে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে সতীর্থ গণিতবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থকে সঙ্গে নিয়ে ক্রিকেটে বৃষ্টির প্রভাব কমিয়ে আনার জন্য ওই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন টনি লুইস।
তাদের দুইজনের নামের শেষাংশ থেকেই এর নামকরণ করা হয় ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথড। প্রায় দুই বছর পরীক্ষামূলকভাবে দেখার পর ১৯৯৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথড গ্রহণ করে আইসিসি। ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি সর্বপ্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে এই নিয়মের ব্যবহার হয়েছিল।
ক্রিকেট ম্যাচে নিয়মটির প্রভাব পড়তে শুরু করে ধীরে ধীরে। তবে ২০০৬ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আবিষ্কারের পর এই নিয়মের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়। কেননা সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে উইকেটের সঙ্গে রানের ভারসাম্য রেখে খেলার কথা খুব কম দলই ভাবে। সমস্যা হয়েছে মূলত টনি-ফ্র্যাঙ্ক যখন তাদের নিয়ম আবিষ্কার করেন, তখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছিল না।
ফলে এ বিষয় মাথায় রাখেননি তারা। পরে এর সমাধান করেন স্টিভেন স্টার্ন। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান এই অধ্যাপক আরও কার্যকরীভাবে এই নিয়মের হালনাগাদ করেন। যার ফলে এখন এটি ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন মেথড বা সংক্ষেপে ডিএলএস মেথড নামেই পরিচিত।
২০১০ সালের জুন মাসে ডাকওয়ার্থ ও লুইস দু’জনকেই এমবিই (মেম্বার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার) সম্মাননা দেওয়া হয়। ক্রিকেটে ডিএলএস নিয়মে খেলার ভাগ্য বদল হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ।
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আজ বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের ওপর নির্ভর করছিল তিনটি দলের ভাগ্য। সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার। ম্যাচ চলাকালীন তিনবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়। শেষ পর্যন্ত ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে আফগানিস্তান।