শনিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৪, ০৩:০৪:০১

মেসির সামনে এবার অবিশ্বাস্য গতির, ড্রিবলিং দক্ষতার ‘রোডরানার’

মেসির সামনে এবার অবিশ্বাস্য গতির, ড্রিবলিং দক্ষতার ‘রোডরানার’

স্পোর্টস ডেস্ক : কোপা আমেরিকায় প্রথমবার সুযোগ পেয়েই চমক দেখাচ্ছে কানাডা। ভেনেজুয়েলাকে কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে অভিষেক আসরেই সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে তারা। 

তবে শেষ চারের লড়াইটা তাদের জন্য বেশ কঠিনই হতে যাচ্ছে। ফাইনাল নিশ্চিত করার মিশনে তাদের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী আর্জেন্টিনা।

আর্জেন্টাইনদের বড় তারকা লিওনেল মেসি, বিশ্ব ফুটবলে তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। আট বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই তারকা কানাডার ফুটবলারদের জন্য বড় আতঙ্কের নাম, সেটা নিয়ে সন্দেহের কিছু নেই। 

কিন্তু অভিষেক আসরেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা কানাডাকেও তো ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। দলটিতে আছে ইউরোপ মাতানো বেশ কিছু তারকা। যারা হুমকি হয়ে উঠতে পারেন আলবিসেলেস্তেদের জন্য। 

ছোট দলটির বড় তারকার নাম আলফোনসো ডেভিস। ঘানার শরণার্থী শিবিরে জন্ম নেয়া এই ফুটবলার ২০১৭ সালে কানাডার নাগরিকত্ব লাভ করেন। তার পজিশন লেফট-ব্যাক। খেলতে পারেন উইঙ্গার হিসেবেও। 

অবিশ্বাস্য গতি, ড্রিবলিং দক্ষতা আর সৃজনশীলতার কারণে তিনি ‘রোডরানার’ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালে কানাডার জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। তবে বিশ্ব ফুটবলে তিনি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন ২০১৯ সালে জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেওয়ার পর। তার প্রতিভায় মুগ্ধ ইউরোপের অন্য জায়ান্ট ক্লাবগুলো।

২৩ বছর বয়সী এ তারকাকে দলে ভেড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে, চেলসি, আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার সিটির মতো ক্লাবগুলো। গুঞ্জন আছে, গ্রীষ্মের দলবদলে বা আগামী মৌসুমে রিয়ালে যোগ দিতে পারেন ডেভিস। এখন পর্যন্ত বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলেছেন ১৩৫ ম্যাচ। গোল করেছেন ৮টি। 

সব মিলিয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারে ২৯৫ ম্যাচে তার গোল ২৫টি, অ্যাসিস্ট ৪৭টি। অন্যদিকে কানাডার হয়ে ৫১ ম্যাচে ১৫ গোলের পাশাপাশি তার অ্যাসিস্ট ১৮। লেফট-ব্যাক হলেও ম্যাচের ফল নিয়ন্ত্রণে তিনিও যে ভূমিকা রাখতে পারেন সেটা তার ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।  
 
কানাডার রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে গেলেও ডেভিসের বিপরীতে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে মেসি, আনহেল ডি মারিয়া, লাউতারো মার্টিনেজ, হুলিয়ান আলভারেজদের। আলবিসেলেস্তেদের বড় চ্যালেঞ্জ ডেভিসের গতি আর ট্যাকল।

অবশ্য শুধু ডেভিসই নয়, আর্জেন্টিনাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন কানাডার ফরোয়ার্ড জনাথন ডেভিডও। সেরা ছন্দে আছেন ফরাসি ক্লাব লিলের এ ফরোয়ার্ড। লিলের হয়ে সবশেষ মৌসুমে ৪৭ ম্যাচ খেলে ২৬ গোলের পাশাপাশি ৯ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। এবারের কোপা আমেরিকায় কানাডা যে দুটি গোলের দেখা পেয়েছে একটি জোনাথন নিজে করেছেন, আরেকটি করিয়েছেন।

জাতীয় দলের হয়ে ৫২ ম্যাচে ২৭ গোল করার পাশাপাশি ১৭ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। এছাড়া স্প্যানিশ ক্লাব মায়োর্কার ফরোয়ার্ড কাইল ল্যারিনও হতে পারেন ভাবনার কারণ। তবে আর্জেন্টিনার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভালো কিছু করতে হলে জ্বলে উঠতে হবে দলের সবাইকে।

অভিষেক আসরে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলেও দলটি থেকে আহামরি কোনো পারফরম্যান্স এখনো পাওয়া যায়নি। গ্রুপ পর্বে ৩ ম্যাচ খেলে ১ জয় আর ১ ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নেয় তারা।  এরপর ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র হলে টাইব্রেকারে জয় তুলে নেয় ডেভিসরা। সব মিলিয়ে আসরে কেবল ২টি গোল করেছে তারা। আসরে তাদের একমাত্র হারটি আবার আর্জেন্টিনার বিপক্ষেই। ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে মেসিদের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল কানাডা। এবার সে প্রতিশোধ নিয়ে ফাইনালে উঠতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

যুক্তরাষ্ট্রের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে বুধবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা-কানাডা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে