স্পোর্টস ডেস্ক : ইউরোর ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি গোল কারোরই নেই। গোলে সহায়তা করার দিক দিয়েও সবার চেয়ে এগিয়ে তিনি। অথচ ৩৯ বছর বয়সে ক্যারিয়ারের শেষ ইউরো খেলতে এসে একটা গোলও করতে পারলেন না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
দলও প্রত্যাশানুযায়ী পারফর্ম করতে ব্যর্থ। কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছে পর্তুগাল। প্রথমবারের মতো ইউরোয় গোল না করেই বিদায় নিলেন ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় রোনালদো।
গতকাল শুক্রবার (৫ জুলাই) কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য সমতায় শেষ করে পর্তুগাল। অতিরিক্ত সময়েও কোনো দল গোল করতে ব্যর্থ হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ফ্রান্সের কাছে ৫-৩ ব্যবধানে হেরেছে পর্তুগাল। পর্তুগালের জোয়াও ফেলিক্সের নেয়া শট পোস্টে লাগলেও ফ্রান্সের সব কয়টি শট লক্ষ্যভেদ করে।
এবারের আসরে পর্তুগালের খেলা পাঁচ ম্যাচের প্রতিটিতে একাদশে ছিলেন রোনালদো। কিন্তু কোনো ম্যাচেই গোল করতে পারেননি আন্তর্জাতিক ফুটবলের এই সর্বোচ্চ গোলদাতা। এবারের আসরে রোনালদোর অর্জন বলতে গ্রুপ পর্বে তুরস্কের বিপক্ষে ব্রুনো ফার্নান্দেজকে একটি গোলে অ্যাসিস্ট, যা তাকে ইউরোর ইতিহাসে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের মালিক বানিয়েছে।
এই নিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো ইউরো খেলতে আসা রোনালদো কোনো গোল না করেই আসর থেকে বিদায় নেয়ার পথে একটি মাইলফলকও ছুঁয়েছেন। লিওনেল মেসির পর বড় কোনো আসরে গোলে সর্বোচ্চ শট নিয়েও গোল করতে না পারার রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন পর্তুগালের অধিনায়ক।
২০১০ বিশ্বকাপে মেসি গোল লক্ষ্য করে ২৯টি শট নিয়েও গোল করতে পারেননি। সেবার জার্মানির কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে ৪-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ব্যালন ডি'অর জিতে তৎকালীন সময়ের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে এসে কোনো গোল না করেই বিদায় নিয়েছিলেন তিনি।
এবারের ইউরোয় রোনালদো গোল লক্ষ্য করে ২৩টি শট নিয়েছেন। তবে তার নেয়া একটি শটও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে মেসির পর বড় কোনো টুর্নামেন্টে রোনালদোই সর্বোচ্চ শট নিয়ে গোলশূন্য থাকলেন। এই ২৩টি শটের মধ্যে ১০টি শট অন টার্গেটে ছিল। ইউরোর ইতিহাসে এত বেশি শটের পরেও গোল না পাওয়ার যৌথ সর্বোচ্চ রেকর্ড এটা। আগেরটা ২০১৬ সালে বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রুইনার।
এবারের ইউরোর পাঁচ ম্যাচসহ শেষ ৯ ম্যাচে গোলহীন রোনালদো। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রোনালদোর ভবিষ্যৎ নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে তো বিদায়ই জানিয়ে দিচ্ছেন ৩৯ পেরোনো এই তারকাকে। তবে এখনও এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন পর্তুগালের কোচ রবার্তো মার্টিনেজ।
ফ্রান্স-পর্তুগালের এই ম্যাচটাই রোনালদোর শেষ ম্যাচ ছিল কিনা, ম্যাচ শেষে এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্টিনেজ বলেন, 'ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই এটা নিয়ে কথা বলাটা একটু আগেভাগেই হয়ে যায় এবং ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।'