স্পোর্টস ডেস্ক : ‘আমি যাচ্ছি কিন্তু যাচ্ছি না…’ । বহুল প্রচলিত বাক্যটি মনে আছে নিশ্চয়ই! এমন বাক্যের ডাবল মিনিং কিংবা ভিন্ন অর্থ থাকে। ডেভিড ওয়ার্নার গতকাল যে অবসরের ঘোষণা দিলেন তাতেও মিশে আছে ভিন্ন অর্থ। সেটা কেমন?
ইন্সটাগ্রামে নিজের অবসরের ঘোষণা দিয়ে ওয়ার্নার বললেন, ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ।’ এর আগে টেস্ট ও ওয়ানডে থেকে ওয়ার্নার অবসরে গেছেন। তাহলে এবারের চ্যাপ্টারটা নিশ্চয়ই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে নিয়ে।
কিছু দূর যেতে না যেতেই ওয়ার্নারই আবার লিখলেন, ‘নির্বাচিত হলে আমি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার জন্যও উন্মুক্ত।’ মানে ২০২৫ সালে পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার আগ্রহ আছে মারকুটে ওপেনারের।
তাহলে অবসরের ঘোষণাটা কেন? সেটাই বিস্ময়কর। আফগানিস্তানের কাছে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ফলে বিশ্বকাপের সুপার ফোরের ম্যাচটাই ওয়ার্নারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এর আগে টেস্ট ও ওয়ানডে থেকে অবসর নেন তিনি। ভারতে গত নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল তার শেষ পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটের ম্যাচ। যে ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া জেতে বিশ্বকাপ। এরপর সিডনি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ান ওয়ার্নার।
সোমবার ইন্সটাগ্রামে ওয়ার্নার লিখেন, ‘চ্যাপ্টার ক্লোজ। এত দীর্ঘ সময়ের জন্য সর্বোচ্চ স্তরে খেলা একটি অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা। অস্ট্রেলিয়া আমার দল ছিল। আমার ক্যারিয়ারের সিংহভাগ ছিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। এটি করতে পারা সম্মানের বিষয়। সব ফরম্যাটে একশরও বেশি ম্যাচ খেলতে পারা আমার ক্যারিয়ারের হাইলাইট হয়ে থাকবে।’
‘আমি প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা এটি সম্ভব করেছে। আমার স্ত্রী এবং আমার মেয়েরা, যারা এত ত্যাগ স্বীকার করেছে। সমস্ত সমর্থনের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ। কোনো ব্যক্তি কখনই জানবে না যে, আমরা কিসের মধ্য দিয়ে গিয়েছি।’
‘সমস্ত ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্য, সত্যিই আশা করি আমি আপনাদের বিনোদন দিয়েছি এবং ক্রিকেটকে পরিবর্তন করেছি, বিশেষ করে টেস্ট, এমনভাবে যেখানে আমরা অন্যদের তুলনায় কিছুটা দ্রুত রান করেছি। আমরা যা ভালোবাসি তা ভক্তদের ছাড়া করতে পারি না। সবাইকে ধন্যবাদ।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিয়ে ওয়ার্নার যোগ করেন, ‘আমি আরও কিছুদিন ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলবো। সঙ্গে জানিয়ে রাখতে চাই, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার জন্য উন্মুক্ত আছি। যদি আমাকে বিবেচনা করে আমি খেলবো।’
২০০৯ সালে কোনো প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট খেলা ছাড়া ওয়ার্নারের অস্ট্রেলিয়া দলে অভিষেক হয়। টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর তিন ফরম্যাটেই টানা অংশগ্রহণ করেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১১২ টেস্ট, ১৬১ ওয়ানডে এবং ১১০ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন বাঁহাতি ওপেনার। রান করেছেন ১৮ হাজারেরও বেশি। যেখানে রয়েছে ৪৯ সেঞ্চুরি ও ৯৮ হাফ সেঞ্চুরি।