স্পোর্টস ডেস্ক : চার মাসও টিকল না ইয়ান-নিকোল লফটি ইটনের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড। নামিবিয়ান ব্যাটারের ৩৩ বলের সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন সাহিল চৌহান। ভারতীয় বংশোদ্ভূত চৌহান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন এস্তোনিয়ার হয়ে।
সোমবার সাইপ্রাসের বিপক্ষে ২৭ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন মিডল-অর্ডার এই ব্যাটার। শুধু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিই নয়, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির রেকর্ডও ভেঙেছেন চৌহান।
এস্তোনিয়ার একদিনে ছিল দুই ম্যাচ। প্রথমটিতে ‘গোল্ডেন ডাক’র তেতো স্বাদ পেয়েছিলেন সাহিল চৌহান। পরের ম্যাচে ব্যাট হাতে তিনি চালালেন তাণ্ডব। বিস্ফোরক এক ইনিংসে ভেঙে দিলেন একাধিক রেকর্ড।
সাইপ্রাসের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়ায় ৪১ বলে ১৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে এস্তোনিয়াকে জেতান সাহিল। তার ৩৫১ দশমিক ২১ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ১৮টি ছক্কার পাশাপাশি ছিল ৬ টি চারের মার। ৩২ বছর বয়সী এই ব্যাটার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাত্র ২৭ বলে! স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরি এটিই।
অবশ্য এর আগে ৩০ বলে সেঞ্চুরি করে এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন ক্রিস গেইল। ২০১৩ আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৬৬ বলে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংসের পথে ৩০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ক্যারিবিয়ান এই তারকা।
সাহিলের ১৮ ছক্কা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে দেরাদুনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের হাযরাতউল্লাহ জাজাইয়ের ১৬ ছক্কা ছিল আগের রেকর্ড।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতেও এক ইনিংসে সাহিলের চেয়ে বেশি ছক্কা মারতে পারেননি আর কেউ। এখানে তিনি গেইলের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। ২০১৭ বিপিএলের ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ৬৯ বলে ১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে ১৮ ছক্কা মেরেছিলেন গেইল।
এদিকে প্রথম ম্যাচে সাহিল শূন্য রানে ফিরলেও ১৯৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় এস্তোনিয়া ৫ উইকেটে জিতে যায় ৩ বল বাকি থাকতে। দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের লক্ষ্য ছিল ১৯২ রানের। প্রথম ৮ বলের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে এস্তোনিয়া। চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে মুখোমুখি প্রথম তিনটি ডেলিভারিতে ছক্কা, চার ও ছক্কা মেরে ডানা মেলে দেন সাহিল। তার ওই ঝড় আর থামেনি।
পঞ্চম ওভারে টানা চার বলে মারেন তিনটি চার ও একটি ছক্কা, ষষ্ঠ ওভারের শেষ পাঁচ বলে চারটি ছক্কার সঙ্গে চার মারেন একটি। ফিফটি পূর্ণ করেন মাত্র ১৪ বলে। নবম ওভারে ৯৯ থেকে ছক্কা মেরেই ২৭ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। তার খুনে ব্যাটিংয়ে এস্তোনিয়া এবার ৬ উইকেটের জয় পায় ৪২ বল বাকি থাকতে। তার ১৪৪ রানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রানে অপরাজিত থাকেন বিলাল মাসুদ।
এদিনের আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাহিলের অভিজ্ঞতা ছিল স্রেফ দুই ম্যাচের। গত বছরের সেপ্টেম্বরে অভিষেকে ৬ বলে ২ ছক্কায় করেন অপরাজিত ১৬ রান। পরের ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন ২ রানে। এবার চতুর্থ ম্যাচেই পেয়ে গেলেন প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ, যা ঝড় তুলল রেকর্ড বইয়েও।