স্পোর্টস ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বিদায় নেয় সেমিফাইনাল থেকে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম পর্বের ব্যারিয়ার টপকাতে পারেননি মামুনুল, জামাল ভূঁইয়ারা। তার উপর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালের আগের রাতে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয় জাহিদের বিপক্ষে।
দলীয় এবং ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স মিলিয়ে বেশ গ্যাঁড়াকলে জাতীয় দলের ফুটবলাররা। জাতীয় দলের ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করতে শেখ মোহাম্মদ আসলামকে প্রধান করে ইলিয়াস হোসেন ও আজমল আহমেদকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাফুফে। তদন্ত কমিটি একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছে বাফুফেকে।
সেই রিপোর্টে অধিনায়ক মামুনুল ইসলামসহ ৭-৮ ফুটবলারকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এতেই ক্ষিপ্ত দেশসেরা ফুটবলার মামুনুল। এর ফলে রাগে-দুঃখে জাতীয় দল থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মামুনুল। জানিয়েছে ঘনিষ্ট সূত্র।
তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মামুনুলসহ ৭-৮ ফুটবলার দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙেছেন। রাতভর ফেসবুকে সময় পার করেছেন। রুমে ফুটবলারদের মদপান করার বিষয়ও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। কমিটির এমন রিপোর্ট নিয়ে জোর আপত্তি মামুনুলের।
প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি ধুমপান করি না। সেখানে মদপানের প্রশ্নই আসে না। আমি ইউরিন টেস্ট দিয়েছি। সেখানে নেগেটিভ রেজাল্ট আসার কথা শুনিনি।’ উল্টো তদন্ত কমিটির এক সদস্যের বিপক্ষে মদপানের অভিযোগ তুলেন, ‘আমার কাছে প্রমাণ আছে তদন্ত কমিটির এক সদস্য মদপান করেন। তার মুখে আমি গন্ধ পেয়েছি। এমন যখন অবস্থা, তখন তারাই কিনা অভিযোগ তুলেন।’
তদন্ত কমিটি ফিটনেস বিষয়ে বলেন, ‘ব্লিফ টেস্টে ২৮ ফুটবলারের মধ্যে আমার অবস্থান তিন। তাহলে আমার ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন উঠা অবান্তর। সবচেয়ে বড় বিষয় কোচ মারুফ ভাই আমাদের সম্পর্কে জানেন। তাকে জিজ্ঞাসা করলেই হয়।’
তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর ভীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন মামুনুল। এতে তার ১০ বছরের জাতীয় দলের ক্যারিয়ার এখন হুমকির মুখে। এছাড়া বাংলাদেশের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে জাতীয় দলকে টানা তিন বছর ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এমন ঝলমলে ক্যারিয়ার এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ায় সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মামুনুল, ‘এবার আমিতো জাতীয় দলের অধিনায়ক হতে চাইনি। ইলিয়াস ভাইয়েরা দেশের জনগণের কথা বলে দায়িত্ব নিতে বলেন। আমি দায়িত্ব নিয়ে শতভাগ উজার করে খেললাম। এখন কি না আমাকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় দলে খেলার বিষয়ে আমাকে ভাবতেই হচ্ছে। যেখানে মান সন্মান থাকে না, সেখানে না থাকাই উচিত। আমার মান সন্মান রয়েছে।’
ক্ষিপ্ত মামুনুল এসএ গেমসের ব্যর্থতার কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানান, ‘জাতীয় দলের ১০-১১ জন ফুটবলারকে নিয়ে এসএ গেমসের এমন ফল কেন? সেটা জানার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হউক। ভারতের সঙ্গে তিন গোলে হার, ভুটানের সঙ্গে ড্র, এমন রেজাল্ট কেন?’
বাংলাদেশ ফুটবলের ব্যর্থতার ইতিহাস লম্বা। ব্যর্থতা খতিয়ে দেখতে এর আগেও তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি রিপোর্ট। এবার অবশ্য তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিডি প্রতিদিন
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস