স্পোর্টস ডেস্ক : এবারের বিসিবি নির্বাচন নিয়ে নাটকীয়তা কিংবা রাজনীতি কম হয়নি। এ নিয়ে গত কয়েকদিন দেশে নানা আলোচনা-সমালোচনাও দেখা গেছে। বিসিবিতে নির্বাচিত হতে পর্দার আড়ালে যেমন আলোচনা হয়েছে, তেমনি প্রকাশ্যেও দেখা গেছে নানা মতবিরোধ। এই যেমন এবারের নির্বাচনে কারা নির্বাচিত হবেন তা নিয়ে বিএনপি ও অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মধ্যে নানা আলোচনার খবরও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে পরিচালক পদে ভোটে অংশ নিয়েছেন ক্রিকেট বোর্ড সংশ্লিষ্ট এমন একজন প্রার্থী দাবি করেছেন, গত কয়েক দিন এ নিয়ে বেশ কয়েক দফায় মিটিং হয়েছে। ভোটারদের প্রভাবিত করার ঘটনাও ঘটেছে। সে সব আলোচনায় কখনো কখনো তামিম ইকবাল নিজেও ছিলেন। নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর পর গত মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনের বা দুদকের তদন্ত চলা ১৫টি ক্লাবকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবির নির্বাচন কমিশন। নানা কারণে ওই ক্লাবগুলো বিতর্কিত ছিল বলেও বিসিবি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
যে কারণে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ওই ক্লাবগুলোকে বাদ দেওয়া হয়। পরে ক্লাবগুলো আবারও বিসিবি নির্বাচনে ভোটাধিকার ফেরত পেতে আদালতে আপিল করে ভোটার হিসেবে বৈধতা পায়। পরে গতকাল মঙ্গলবার ওই ক্লাবগুলোর ভোটাধিকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ আপিল করেন সাবেক বিসিবি সভাপতি ও নির্বাচনে পরিচালক পদপ্রার্থী ফারুক আহমেদ। পরে হাইকোর্টের রায়ে আবারো ওই ১৫টি ক্লাবকে বাদ দেওয়া হয়।
বিসিবি সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা ও ক্রীড়া বিশ্লেষকদের সাথে এটি নিয়ে কথা বলে যতটুকু বোঝা গেছে, তার সারমর্ম অনেকটা এমন যে, মঙ্গলবার হাইকোর্টের রায়ের পরই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি অনেকেই ধারণা করছিলেন। এ নিয়ে নানা দেন-দরবার ও দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে গত সোম ও মঙ্গলবার। শেষ পর্যন্ত বুধবার সকালে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন তামিম ইকবাল।
সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক এম এম কায়সার বলেন, "বাস্তবতা হলো তামিম এই নির্বাচনে জেতার জন্য এবং বড় চেয়ার পাওয়ার জন্য সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের সঙ্গে একধরনের সমঝোতা এবং ভাগাভাগির প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছিলেন। এনিয়ে গত সোমবার এবং মঙ্গলবার রাতে তারা লম্বা সময় জুড়ে বৈঠক করেছিলেন। শুরুতে সেই বৈঠকে উভয়পক্ষের হাসিমুখ থাকলেও শেষপর্যন্ত আর আর স্থায়ী হয়নি। কারণ ভাগবন্টনের সমঝোতা যে হলো না"।
অন্যদিকে, এই নির্বাচনে বিএনপির চারজন নেতার ছেলেরা প্রার্থীও হয়েছেন। সরকারের সাথে সেটি নিয়ে পর্দার অন্তরালে এক ধরনের সমঝোতার খবরও প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। কায়সার বলছিলেন, "তামিম তার প্যানেলে বিএনপির 'পলিটিক্যাল কিডসদের' জায়গা দিতে গিয়ে ক্লাবের অনেক পরীক্ষিত এবং তার সমর্থনে এতদিন স্লোগান তোলা ক্রিকেট সংগঠকদের জায়গা দিতে পারেননি। নিজের প্যানেলে এ নিয়ে তামিমকে বড় সঙ্কটে পড়তে হয়েছিল। অন্যদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সরকার সমর্থিত পক্ষের সঙ্গে সমঝোতাও শেষ পর্যন্ত না হওয়ায় চারদিকের তুমুল চাপের মধ্যে পড়তে হয় তামিমকে"। তার মতে, তামিম সত্যিকার অর্থে এই নির্বাচনে বিরুদ্ধপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় বা ভাগাভাগিতে এবং নিজের প্যানেল সাজানোর পরিকল্পনায় হেরে গিয়েই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।