বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:৫৮:২৮

তাসকিনকে বড় ভাইয়ের মতো পরামর্শ দিলেন মাশরাফি

তাসকিনকে বড় ভাইয়ের মতো পরামর্শ দিলেন মাশরাফি

স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বোলার তাসকিন আহমেদ ও মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাশরাফির সামনে কোন খেলা না থাকায় তিনি বাসায় সময় কাটাচ্ছেন। কিন্তু তাসকিন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ভারতে খেলতে গিয়ে কাধে চোট পেয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। দেশে এসে করানো এমআরআই রিপোর্টেও কাধের চোটটি ধরা পড়েছে। পেয়েছেন দুঃসংবাদও—চার থেকে ছয় সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে। তাসকিনকে তাই আবারও প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে পুনর্বাসনের কষ্টকর প্রক্রিয়ার জন্য, ‘কয়েক দিন পরই ভালোভাবে পুনর্বাসন শুরু হবে। আশা করি চার সপ্তাহের মধ্যে বোলিং শুরু করতে পারব। বিপিএলের ১৫-২০ দিন আগে পুরো ফিট হয়ে যাওয়ার কথা আমার।’

‘এ’ দলের ভারত সফর তাসকিনের সামনে খুলে দিয়েছিল স্বপ্নপূরণের জানালা। ভারতে যাওয়ার ঠিক আগে স্বপ্নটা ভর করেছিল চোখে, ‘আমি এখন দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ খেলার জন্য প্রস্তুত।’ নির্বাচকেরাও চাচ্ছিলেন, ভারত সফরে অন্তত একটি তিন দিনের ম্যাচ খেলে আসুন তাসকিন। ম্যাচটা ঠিকঠাক খেলতে পারলে তাঁকে টেস্ট খেলানোরও চিন্তা ছিল। হয়তো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টেই মাথায় উঠে যেত টেস্ট ক্যাপ।

সব যখন ঠিকঠাক, তখনই ওই অঘটন। ভারত থেকে মন খারাপ করে ফিরলেন তাসকিন। নিজেদের কষ্ট লুকিয়ে বাবা-মা সাহস দেন, হয়তো সামনে আরও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। কিন্তু সেই সান্ত্বনা টেস্ট অভিষেক আবারও দূরে সরে যাওয়ার ক্ষতে প্রলেপ হয় না। ভারত থেকে ফেরার দুই দিন পর তাই তাসকিন গেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজার বাসায়।
সাপের দংশনের যন্ত্রণা একমাত্র সাপে কাটা মানুষই বোঝে। মাশরাফির কাছে যাওয়া সে কারণেই। দুই হাঁটুতে সাতবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। এর বাইরেও ক্যারিয়ারজুড়ে ছোটখাটো চোটের দীর্ঘ ইতিহাস। চোটের ছোবলে মাঠের বাইরে থাকার জ্বালা তাঁর চেয়ে ভালো আর কে বুঝবে?

মাশরাফির কাছে যাওয়ার আগে ডুবে ছিলেন বিষণ্নতায়। সেখান থেকে ফেরার সময় যা অনেকটাই উধাও, ‘অনেক মন খারাপ ছিল। কিন্তু মাশরাফির ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো লেগেছে। উনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝিয়েছেন। বলেছেন হতাশ না হতে। মন না ভাঙতে। ফিটনেসের ব্যাপারে কিছু টিপসও দিয়েছেন। দুই ঘণ্টার মতো ছিলাম। ওনার কথাগুলো শোনার পর মন ভালো হয়ে গেছে।’

তিন দিনের ম্যাচে খেলা না হলেও ভারতে গিয়েই সাদা পোশাক পেয়েছিলেন। জাতীয় দলে আসার পর থেকে কেবল রঙিন জার্সি গায়েই মাঠে নামছেন। সাদা পোশাকের তুলনায় সেটাই সাদামাটা হয়ে গিয়েছিল তাঁর কাছে। বেশি ‘রঙিন’ বরং সাদা পোশাকই। তাসকিনের কণ্ঠে সে রোমাঞ্চ ধরা পড়ল কালও, ‘প্রায় আড়াই-তিন বছর পর “এ” দলের সফরে সাদা জার্সি-ট্রাউজার পেলাম। সাধারণত এটা আমি পাই না। ওগুলো হাতে পাওয়ার পর অনেক স্বপ্ন জেগেছিল মনে, অনেক খুশি হয়েছিলাম। ভাবছিলাম এবার ইনশা আল্লাহ টেস্টও খেলে ফেলব।’
অন্তত অস্ট্রেলিয়া সিরিজে যে সেটা হচ্ছে না, তা এখন নিশ্চিত। তাসকিনের আদর্শ মাশরাফি অবশ্য মনে করেন, এখনো টেস্ট খেলার চিন্তা করারও সময় হয়নি চোটপ্রবণ ২০ বছর বয়সী এই পেসারের। তাসকিনকেও এটাই বলেছেন। মুঠোফোনে মাশরাফির সঙ্গে কথা বলে তা বলার কারণটাও জানা গেল, ‘আমার মনে হয় একজন পেসারের টেস্ট খেলার জন্য যে ফিটনেস দরকার, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর মধ্যে যে সমন্বয় দরকার, সেটা ওর এখনো হয়নি। বারবার একই চোটে পড়াই এর ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমি ওকে বলেছি, সামনে লম্বা সময় পড়ে আছে। টেস্ট খেলা নিয়ে তাড়াহুড়ো না করতে। সেটা করলে বরং ওর ক্ষতিই হবে।’ প্রথম আলো
২৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে