বিজয় রায় খোকা, কিশোরগঞ্জ: আবারও দানবাক্সে মিললো কোটি টাকা, প্রচুর সোনা-রূপা। কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার প্রায় ৮৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (৩১ মার্চ) বিকালে গণনা শেষে এই টাকার হিসাব পাওয়া যায়। টাকা ছাড়াও দান হিসেবে অনেক সোনা ও রূপার অলঙ্কার পাওয়া গেছে।
শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দান বাক্সগুলো খোলা হয়। পরে শুরু হয় টাকা গণনার পালা।
কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছে দুই শতাব্দী পুরনো পাগলা মসজিদ। পাঁচ তলা উঁচু মিনারের মসজিদটি দূর থেকেই নজর কাড়ে। তবে দেশজুড়ে এর পরিচিতি দানবাক্স থেকে পাওয়া কোটি টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণালঙ্কারের কারণে। প্রতি চার মাস পর পর এ মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। তবে এবার তিন মাসের মাথায় এ মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।
সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খুলে ১ কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪ শত ৭১ টাকা পাওয়া যায়।
শনিবার বিকালে জেলার সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদের উপস্থিতিতে গণনা শেষে বিপুল পরিমাণ দানের টাকার হিসাব পাওয়া যায়।
এছাড়া, সাথে পাওয়া গেছে প্রচুর সোনা ও রূপা, যা এখনো পরিমাপ করা হয়নি। বেশ কিছু মার্কিন ডলার, সিঙ্গাপুরি ডলার, সৌদি রিয়াল, মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত ও মিয়ানমারের মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
এর আগে সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়। প্রথমে দান সিন্দুক খুলে যাবতীয় টাকা বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনার কাজ। এসময় সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্য সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা বলছেন, এই মসজিদে মানুষ দু’হাত খুলে দান করেন। শুধু মুসলমান নয়, অন্যান্য ধর্মের লোকজনকেও এ মসজিদে দান করতে দেখা যায়। এটি দেশের অন্যতম বিত্তশালী মসজিদ।
মানুষের বিশ্বাস, কোনও আশা নিয়ে একনিষ্ঠ মনে এ মসজিদে দান করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। রোগ-শোক ছাড়াও বিভিন্ন উপলক্ষে মানুষজন এ মসজিদে মানত করে দান করেন। যুগ যুগ ধরে এ বিশ্বাস থেকেই মানুষ মসজিদটিতে দান করছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদ জানান, দানবাক্স খোলার সময় এপর্যন্ত বেশ কয়েকবার আমি উপস্থিত ছিলাম। পুরো মসজিদটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকায় শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সব গণনার কাজ শেষ করা যায়। রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় পাগলা মসজিদটির একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সব টাকা ওই অ্যাকাউন্টেই জমা করা হয়। আর স্বর্ণালঙ্কার বা বৈদেশিক মুদ্রা পরিমাপ না করে মসজিদের একটি ভল্টে মজুদ রাখা হয়।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস