নিউজ ডেস্ক: ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের আয় থেকে ২২ লাখ টাকা খরচ করেছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এরপর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং জনপ্রশাসনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাঁচ বছর মন্ত্রী থাকার পর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যখন অংশ নেন, তখন তিনি নিজের আয় থেকে নির্বাচনে এক টাকাও খরচ করতে পারেননি।
গত পাঁচ বছরে দেশের অনেক মন্ত্রী-এমপির সম্পদ কয়েক গুণ বাড়লেও সৈয়দ আশরাফকে তার আত্মীয়-স্বজনরা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে ২৫ লাখ টাকা দেন নির্বাচনে খরচ করার জন্য। সেই টাকায় নির্বাচন করেন এবং জয়লাভ করেন তিনি।
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জমা দেয়া তার হলফনামা থেকে নির্বাচনী খরচের এ তথ্য জানা যায়।
দশম জাতীয় নির্বাচনে আশরাফের জমা দেয়া হলফনামার ফরম-২১ থেকে জানা যায়, রাজধানীর গুলশানে পাঁচ কাঠার একটি প্লট এবং পৈতৃক সূত্রে কিশোরগঞ্জে ১টি ও ময়মনসিংহে একটি বাড়ি ছিল। আশরাফের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে হলফনামায় জমা দেয়া ফরম ২১-এ দেখা যায়, পাঁচ বছরের ব্যবধানে এসব সম্পত্তি বাড়েনি, একই আছে।
দশম নির্বাচনের ফরম ২১ থেকে আরও জানা যায়, ২০১৩ সালে আশরাফের ব্যক্তিগত ঋণ ছিল ৯৮ লাখ টাকা। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামা থেকে জানা যায়, তিনি এই দেনা শোধ করতে পেরেছিলেন।
নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলমানার ফরম-২১ থেকে আরও জানা যায়, ২০০৮ সালে তার বছরে আয় ছিল ৬৮ হাজার টাকা, ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯০০ টাকা। ২০১৩ সালে বাৎসরিক আয় ছিল ৬ লাখ ৩৭ হাজার ২০০ টাকা এবং ব্যয় ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ১৮০ টাকা। ২০১৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ১০৮ টাকা আর খরচ ছিল ২৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।
হলফনামায় পেশা সেমাজসেবা উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করলেও শপথ নেয়া হয়নি সৈয়দ আশরাফের। শপথের দিন (৩ জানুয়ারি) থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আজ শনিবার (৫ জানুয়ারি) তার মরদেহ দেশে আনা হবে। সন্ধ্যা ৬টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসার কথা রয়েছে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার ২১ বেইলি রোডে তার সরকারি বাসভবনে আনা হবে। আর রাত সাড়ে ৮টায় রেইলি রোডের বাসা থেকে সিএমএইচে রাখা হবে তার মরদেহ।
আগামীকাল রোববার (৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় গার্ড অব অনারসহ প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে, দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে দ্বিতীয় জানাজা, দুপুর ২টায় ময়মনসিংহ আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে তার মহদেহ আবারও ঢাকায় আনা হবে। বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।