মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০১৬, ০১:১৩:৩৫

জাহিদুলের উধাও রহস্যের খোঁজে পুলিশ

জাহিদুলের উধাও রহস্যের খোঁজে পুলিশ

আশরাফুল ইসলাম: শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনাস্থল সবুজবাগ এলাকার আবদুল হান্নান ভূঁইয়া বাবুলের বাসার আঙিনা থেকে পুলিশের হাতে আটক হয় জাহিদুল হক তানিম। বন্দুকযুদ্ধের পর পরই তাকে আটক করে পুলিশ। জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে মামলায় আসামি করা হয় তাকে। জঙ্গি হামলায় সন্দেহভাজন এই যুবক ছিল একেবারেই ছন্নছাড়া। কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা মনিপুরঘাট এলাকার বাসা থেকে প্রায়ই উধাও হয়ে যেতো। কিন্তু কোথায় যেতো, কি করতো কেউ জানতো না।

গত দেড় বছরে অসংখ্যবার জাহিদুল এভাবে উধাও হয়ে গিয়ে আবার ফিরে এসেছে। তার এই উধাও রহস্যেরই সূত্র এখন মেলাতে বসেছে পুলিশ। রোববার রাতে জাহিদুলকে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডে নিলেও সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেনি। তবে উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে জাহিদুলের দেয়া নানা তথ্য যাচাই-বাছাই করছেন তারা। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শোলাকিয়ার হামলার সঙ্গে জাহিদুলের উধাও রহস্যের কোনো না কোনো সংযোগ রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে নারাজ পুলিশ। জাহিদুলের রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদে তারা অবলম্বন করছেন কঠোর গোপনীয়তা।

এদিকে র‌্যাবের হেফাজতে চিকিৎসাধীন জঙ্গি শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলারও চেষ্টা করছে পুলিশ। এ জন্য হোসেনপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. মজিবুর রহমান ও কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই ফরহাদের সমন্বয়ে একটি টিম বর্তমানে ময়মনসিংহে অবস্থান করছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোর্শেদ জামান জানান, শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া জাহিদুল হক তানিম (২৪)কে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছেন তারা।

রোববার রাতে কিশোরগঞ্জের ১নং আমলগ্রহণকারী আদালতের বিচারক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ. ছালাম খান জাহিদুলের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জাহিদুলকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে শুনানি শেষে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনায় পাকুন্দিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারনামীয় দুই আসামির মধ্যে জাহিদুল একজন। মামলার অপর আসামি শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম (২২) সুস্থ হওয়ার পর তাকে দ্রুত আদালতে হাজির করার জন্য বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন।

বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের গুলিতে আহত শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম র‌্যাবের হেফাজতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলেও মোর্শেদ জামান জানান। ঈদের দিন সকাল সোয়া ৯টার দিকে শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের তিনশ’ গজের মতো দূরত্বে সবুজবাগ মোড় পুলিশ চেকপোস্টে বোমা ও চাপাতি নিয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে দুই পুলিশ সদস্য নিহত হওয়া ছাড়াও অন্তত ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপর পুলিশ ও জঙ্গিদের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হলে এক জঙ্গি নিহত হয়। এছাড়া ঘটনাস্থলের একটি বাসার জানালা ভেদ করা গুলিতে এক গৃহবধূ মারা যান।

ওই ঘটনায় জাহিদুল পুলিশের হাতে ও শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম র‌্যাবের হাতে আটক হয়। শরীফুল ইসলাম ওরফে শফিউল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের আবদুল হাইয়ের ছেলে এবং জাহিদুল হক তানিম কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা মনিপুরীঘাট এলাকার আব্দুছ ছাত্তারের ছেলে। পুলিশ বলছে, হামলাকারীরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সদস্য।-এমজমিন

১২জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে