বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৬, ০২:৪৯:১৯

চড় মারার প্রতিশোধ নিতে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করা হয়

 চড় মারার প্রতিশোধ নিতে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করা হয়

নিউজ ডেস্ক: হত্যার একদিন আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে নাজমুলকে দুটি চড় মারেন তার স্ত্রী। তাতেই ক্ষুব্ধ ও অপমানিত হয়ে প্রতিশোধ নিতে গলা টিপে প্রথমে স্ত্রীকে ও স্ত্রীর ধস্তাধস্তিতে সন্তান ঘুম থেকে উঠে গেলে তাকেও গলা টিপে হত্যা করা হয়। ঘাতক নাজমুল উপজেলার বরকৈট শ্রীমন্তপুর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে।

গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে আজ বুধবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান।

আবিদ হোসেন জানান, কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত  সালাহ উদ্দীনের নেতৃত্বে এসআই মজনু মিয়াসহ পুলিশের একটি দল লুঙ্গি গেঞ্জি পরে ছদ্মবেশে রাঙামাটির লংগদু থানাধীন পাহাড়ি দুর্গম এলাকার মাইনামো লঞ্চঘাট থেকে স্ত্রী ও সন্তানের হত্যাকারী নাজমুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট রাতে কুমিল্লা শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকার মিমপেক্স অ্যাগ্রো কেমিক্যাল লিমিটেডের পানির ট্যাংক থেকে কুমিল্লার বরুড়ার দেওড়া গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে নাসিমা আক্তার ও তার এক বছর বয়সী শিশু সন্তান নাফিজের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত নাসিমার বাবা খলিলুর রহমান বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পলাতক থাকায় তার ওপর সন্দেহ সৃষ্টি হয়।

কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক সালাহ উদ্দীন বলেন, "গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার মাইনামো এলাকায় অবস্থান নেই। যেহেতু ওই এলাকায় লোকজন কম, সেজন্য স্থানীয়দের পোশাক অর্থাৎ লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরে নৌকায় করে গিয়ে লঞ্চঘাট থেকে ঘাতক নাজমুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জানান, নাজমুল এর আগে দুইটি বিয়ে করেছিলন। প্রথম স্ত্রীকে তিনি তালাক দেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রী ক্যান্সারে মারা যাওয়ার পর পাঁচ বছরের বড় নিহত নাসিমাকে বিয়ে করেন। তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। তার নাম নাফিজ। আবার নাসিমারও নাজমুল দ্বিতীয় স্বামী।

সালাহ উদ্দীন আরো জানান, ঘটনার আগের দিন পারিবারিক বিরোধের জের ধরে নাসিমা তার স্বামী নাজমুলের গালে দুটি চড় দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি প্রতিশোধ নিতে প্রথমে নাসিমাকে গলা টিপে ওড়না পেঁচিয়ে এবং পরে ধস্তাধস্তির সময় শিশু সন্তান ঘুম থেকে উঠে গেলে তাকেও গামছা পেঁচিয়ে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর তাদের লাশ নিজেই কোলে করে নিয়ে পানির ট্যাংকে ফেলে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেন। তারপর তিনি  ট্রেনে করে প্রথমে চট্টগ্রাম ও পরে বিআরটিসি বাসে করে রাঙ্গামাটিতে গিয়ে দুর্গম এলাকায় আত্মগোপন করেন।

১৬ আগস্ট সকাল ১১টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার কুমিল্লার আদালতে তাকে সোপর্দ করে তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কুমিল্লা পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) আলী আশরাফ ভূঁইয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আবদুল্লাহ আল মামুন, কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রব উপস্থিত ছিলেন।-কালের কণ্ঠ
১৭ আগস্ট ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে