কুমিল্লা : কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় বৃদ্ধা হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। বুধবার কুমিল্লার ৪নং আমলী আদালতে নিহত ওই নারীর ঘরজামাই মনির হোসেন মনির হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলত জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ সময় দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরী ১৬৪ ধারায় তার বক্তব্য রেকর্ড করেন। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঘাতক মনিরের শাশুড়ি ফরিদা বেগম (৬২) দেবিদ্বার উপজেলার ধামতি পূর্বপাড়া খোশকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী। মনির হোসেন (৩৫) ফরিদার সৎ মেয়ে আয়েশার স্বামী। ফরিদা বেগমের বসতঘরের পাশেই ঘরজামাই মনির শ্বশুরের দেয়া একখণ্ড জমিতে ঘর তুলে স্ত্রী সন্তানসহ বসবাস করে আসছিলেন। তার মূলবাড়ী দেবিদ্বার উপজেলার খয়রাবাদ গ্রামে।
আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে মনির জানান, ‘শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি দখলের জন্য গত সোমবার রাত ২টায় শাশুড়ির ঘরের জানালার নিচের অংশে সিঁধকেটে ঘরে ঢুকে বালিশচাপায় শাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যা করি।’
এদিকে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মনিরও অন্যদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে মৃত শাশুড়ির জন্য কান্নাকাটি করতে থাকেন। প্রাথমিকভাবে তাকে কিছু প্রশ্ন করা হলে তিনি স্বাভাবিক জবাব দিলেও পুলিশের সন্দেহ এড়াতে পারেননি। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
ওই ঘটনায় নিহতের মেয়ে মরিয়ম বাদী হয়ে মনির হোসেনকে একমাত্র আসামি করে দেবিদ্বার থানার মামলা করেছেন।
দেবিদ্বার থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সৎ মেয়ে আয়েশার স্বামী মনির হোসেন জানিয়েছেন শাশুড়ি অসুস্থ হওয়ায় সৎ মেয়ে জামাইকে দেয়া অংশ ছাড়া বাকি ৬ শতাংশ জমি আগের সংসারের ১ মেয়েসহ ৬ মেয়েকে সমহারে লিখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ছিলেন ঘরজামাই মনির হোসেন। ২০ হাজার টাকা নিয়েও তাকে খারাপ ডোবা জায়গায় থাকতে দেয়া হয় এবং সবসময় ঘরজামাই বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করায় প্রতিশোধ নিতে ও শাশুড়ির ঘরটি দখলে নিতেই বালিশচাপায় শাশুড়িকে হত্যা করেছেন বলে ঘাতক মনির স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।