মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার চান্দিনায় আওয়ামী লীগ ও এলডিপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। রবিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলার মহিচাইল বাজার এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় আহতরা হলেন- হরিনা গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে মাইজখার ইউনিয়ন এলডিপি’র সদস্য মজিবুর রহমান (৫৫) এবং গণতান্ত্রিক যুবদল মাইজখার ইউনিয়ন শাখার সদস্য মাহবুবুর রহমান (৪৭), মহিচাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হক আব্দুল্লাহ (৫৫), একই গ্রামের আবদু মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গণি (২০), মোখলেছ মিয়ার ছেলে গণতান্ত্রিক ছাত্রদল নেতা রিফাতসহ (২০) অন্যান্যরা। এদিকে শনিবার রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত আব্দুল হক আব্দুল্লাহর ছেলে ইউসুফ বাদী হয়ে চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের অনুসারী এবং এলডিপি নেতাকর্মীরা দলটির মহাসচিব সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদের অনুসারী।
আওয়ামী লীগ নেতা ও কুমিল্লা জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাজধানীর পল্টনে পুলিশের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকালে মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। মিছিল শেষে নেতা-কর্মীরা বাড়ি ফেরার পথে মহিচাইল হরিণা গ্রামের মধু মিয়ার ছেলে বিল্লাল ও মহিচাইল গ্রামের মোখলেছ এর ছেলে রিফাত এর সাথে ঝগড়া ও মারামারি হয়।
এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ এর ভাগিনা গণতান্ত্রিক ছাত্রদল আহবায়ক রাজিব ভূইয়া জানান, মহিচাইল-ছাতাড্ডা রোডের পাকা রাস্তার সংস্কার কাজ করার সময় মহিচাইল হরিনা গ্রামের মধু মিয়ার ছেলে বিল্লাল ও আলম মজুমদারের ছেলে রাজু মজুমদার ঠিকাদারের কাছে চাঁদা চেয়েছিল। ওই ঘটনায় মহিচাইলের লোকজনের সাথে রিফাতও চাঁদাবাজ বিল্লালকে আটক করে মারধর করে। ওই ঘটনার পর থেকে বিল্লাল ও রাজু ক্ষুব্ধ হয় রিফাতের উপর। শনিবার ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের পর রিফাতকে একা পেয়ে বিল্লাল ও রাজু মারধর করে এবং রিফাতকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে ওই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে রিফাতের লোকজন ক্ষিপ্ত হলে ওই ঘটনা ঘটে।
শনিবারের ঘটনার জের ধরে রবিবার সকাল ৮টায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মহিচাইল বাজারে ড. রেদোয়ান আহমেদ এর মালিকানাধীন একটি মার্কেটে হামলা চালিয়ে দোকান ভাঙচুর ও দুই নেতাকে মারধর করে।
রাজিব আরও জানান, চান্দিনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর আমাদের একটি দোকানের ভিতর থেকে আমার মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায়। চান্দিনা থানার ওসি মো. আবুল ফয়সল জানান, রোববারে সংঘর্ষের খবর জানি না। তবে মহিচাইল বাজারে উত্তেজনা বিরাজ করছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তিনি আরও জানান, শনিবার সন্ধ্যার সংঘর্ষের ঘটনায় রাতেই মহিচাইল গ্রামের মৃত- আনু মিয়ার ছেলে মো. জসিম উদ্দিন (৪৪) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।-আমাদেরসময়.কম