নিউজ ডেস্ক : কুমিল্লার হোমনায় ধর্ষিত হলো নবম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রী। জমিতে কাজ করা কৃষক বাবাকে ভাত খাইয়ে বাড়ি ফেরার পথে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সুমন সরকারের (২৯) লোলুপ দৃষ্টি পড়ে মেয়েটির ওপর। একেবারে দিন-দুপুরে, বেলা এগারোটায় খোলা জায়গায় জোরপূর্বক এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটায় সে।
ধর্ষক সুমন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও কয়েক মামলার আসামি। গত শুক্রবার উপজেলার মাথাভাঙা ইউনিয়নের ভংগারচর গ্রামে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে হোমনা থানায় ধর্ষক সুমনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেন।
মামলা করায় ছাত্রীর বাবা-মাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে সুমন অভিযোগ ধর্ষিতার পরিবারের। তার বিরুদ্ধে এটি ছাড়াও ইতিপূর্বে হোমনা থানায় গণধর্ষণ, মাদক ও মারামারিসহ আরও সাতটি মামলা রয়েছে। রবিবার মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
থানা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মেয়েটি উপজেলা সদরের ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। অবসরে বাবা-মার কাজেও সহায়তা করে থাকে সে। ওই দিনও কৃষক বাবা জমিতে কাজ করছিলেন। তাই বাবার জন্য সকাল সাড়ে দশটায় জমিতে খাবার নিয়ে গিয়েছিল সে। সকাল এগারোটায় বাবাকে খাবার খাইয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার দাড়িঁগাও গ্রামের মো. রেজাউল করিম ওরফে রাজা মিয়ার ছেলে বখাটে সুমনের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তার ওপর।
মেয়েটি ভংগারচর গ্রামের জনৈক রজ্জব আলী মাস্টারের কাঠ বাগানের কাছে এলে তাকে জোরপূর্বক মাটিতে ফেলে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। তারপর তাকে হুমকি দেয়, এ ঘটনা কারও কাছে প্রকাশ করলে তার বাবা-মাকে মেরে ফেলবে।
বিষণ্ন মুখে বাড়িতে গেলে পরিবারের অন্যরা প্রশ্ন করে। তখন সে জানায় সুমন তাকে ধর্ষণ করেছে। সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপারটি জানায়নি পরিবারের কেউ। তবে এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে বলে শোনা গেছে। পরে গত শনিবার রাতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে হোমনা থানায় ধর্ষণ মামলা করলে ঘটনা জানাজানি হয়। এ নিয়ে এলাকার সুমনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ধর্ষক সুমনের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় গত ২০১৭ সালে একটি গণধর্ষণ, ২০১৩, ’১৭ ও ’১৮ সালে তিনটি মাদক মামলা এবং এবং ২০১৫ সালে তিনটি মারামারির মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সে বর্তমানে জামিনে গত শুক্রবার নবম শ্রেণির ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
ভিকটিমের বড় ভাই মো. ইসমাইল বলেন, ‘মামলা করার পর থেকে সুমন ও তার লোকজন আমাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে; মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। সুমন খুব খারাপ মানুষ। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করুক। আমরা তার উপযুক্ত বিচার চাই।’ মাথাভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজিরুল হক ভূইয়া জানান, ‘সুমন এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এই ধরণের ঘটনা কোনোভাবে মানতে পারি না। আমি সুমনের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’
হোমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী নাজমুল হক জানান, ‘সুমন এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এর আগেও ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে থানায় ১টি গণধর্ষণের মামলা, ৩টি মাদক ও ৩টি মারামারিসহ সাতটি মামলা রয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুমনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
সূত্র: আমাদেরসময়.কম