কুমিল্লা: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। বিকেল ৩টায় ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
এদিকে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৬৮ হাজারেরও অধিক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কুমিল্লা শহরে অবস্থান করা নিয়ে বিড়ম্বনা দেখা দেয়। আবাসিক হোটেলের কক্ষ বুকিং শেষ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের অনেকেরই রাস্তায় অবস্থান করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। এমন পরিস্থিতে পুলিশ লাইনের ব্যারাক পরীক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে ইনডোর স্টেডিয়ামে থাকা ও টাউন হল মাঠে নামমাত্র মূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের এমন মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ভর্তিচ্ছুরা।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই নগরীতে ভর্তিচ্ছুদের ঢল নামে। অনেকের সঙ্গে ছিলেন অভিভাকরা। হোটেলে রুম পেতে অনেকেই দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেন। সন্ধ্যায় অনেকেই হোটেলে রুম না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে ছাত্রীরা পড়েন বিপাকে। অনেক পরীক্ষার্থী হোটেলে রুম না পেয়ে রাস্তায় কিংবা রেলওয়ে স্টেশনে রাত কাটানোর পরিকল্পনা করেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পুলিশ লাইনের ভেতর নবনির্মিত ছয় তলা ব্যারাকটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরদের থাকার জন্য উন্মুক্ত করে দেন পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। শুধু নিরাপদে থাকাই নয়, তাদের মাঝে বালিশ, কম্বল, মশার কয়েল, খাবার পানিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করেন জেলা পুলিশের সদস্যরা।
আল-আমিন, খায়রুল আলম, তানিম ইকবাল, জানে আলমসহ আরও কয়েকজন পরীক্ষার্থী বলেন, সন্ধ্যায় শহরের কোনো হোটেলে রুম না পেয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে রাত অতিবাহিত করবো। কিন্তু পুলিশ সুপার মহোদয় পুলিশ লাইনের ব্যারাকের ভেতর আমাদের স্থান দিয়ে যে মানবতার পরিচয় দিলেন তা কর্মজীবনে গিয়েও মনে থাকবে। কুমিল্লার পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ।
এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, এক সঙ্গে এতো পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা নগরীতে নেই। তাই অনেকেই হয়তো বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনে কষ্ট করে রাতযাপন করে পরদিন পরীক্ষা দিতো। মানবিক কারণেই পুলিশ লাইনের মতো সুরক্ষিত স্থানে পরীক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াত ও নিরাপত্তায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার সকালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখায় পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী।
এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদের অধীনে মোট ১ হাজার ৪০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৬৮ হাজার ৭৭ জন শিক্ষার্থী। প্রতিটি আসনের বিপরীতে ৬৫জন শিক্ষার্থী ভর্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করছেন।