কুমিল্লা: বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুরে একটি নিজস্ব সংগীত রচনা করে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে গাইয়ে বিপদে পড়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি ভাই'রাল হওয়ার পর কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সিদ্ধেশ্বরী দারুল কুরআন আল আরাবিয়্যাহ মাদরাসাটি বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
রোববার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন পুলিশ নিয়ে ওই মাদরাসায় গিয়ে সাময়িকভাবে মাদরাসাটি বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ।
এদিকে সোমবার মাদরাসার মুহতামিম নাজিবুল্লাহ আফসারী তার ফেসবুক আইডিতে ভিডিও বার্তায় এজন্য জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনাসহ বিতর্কিত ভিডিওটি তার সকল অনুসারীদের আইডি থেকে সরিয়ে নেয়ার অনুরাধ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের আদলে ‘আমার দয়ার আল্লাহ’ শিরোনামে নিজস্ব সংগীত সুর করে শিক্ষার্থীদের দিয়ে গাওয়ানোর পর গত সপ্তাহে মাদরাসার মুহতামিম নাজিবুল্লাহ আফসারী তার ফেসবুক আইডিতে সেটি পোস্ট করেন।
এ সংগীতের পুরো সুরটি জাতীয় সংগীতের আদলে। নিজের এই সংগীত তিনি ১৩ অক্টোবর ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন। এরপর ১৫ অক্টোবর তার ইউটিউব চ্যানেল ‘নাজিবুল্লাহ টিভি’তে আপলোড করেন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভা'ইরাল হলে গত শনিবার তিনি পোস্ট সরিয়ে নেন। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানতে পেরে রোববার দুপুর ২টার দিকে মাদরাসায় গিয়ে সাময়িকভাবে মাদরাসাটি বন্ধ করে দেয়। এ সময় মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাস ও মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, জাতীয় সংগীত নকল করে নিজস্ব সংগীত তৈরি করেছিলেন মুরাদনগরের ওই মাদরাসা শিক্ষক। বিষয়টি আমরা জানতে পেরে কপিরাইট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিবন্ধনবিহীন মাদরাসাটি বন্ধ ঘোষণা করেছি।
তবে মাদরাসায় গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে তাকে বলা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে নকল করা নিজস্ব সংগীতটি সরিয়ে আরেকটি ভিডিওর মাধ্যমে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহম্মেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় সংগীতের সুরে এবং নকল করে একটি ইসলামী সংগীত পরিবেশন করে ফেসবুক এবং ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন মাদরাসার মুহতামিম, যা কপিরাইট আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিষয়টি নিয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটা নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
এদিকে সোমবার ওই মাদরাসা শিক্ষক তার ফেসবুকে পোস্ট দেয়া এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশসহ দেশবাসী ও প্রশাসনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে জানান, ‘প্রচলিত আইনটির বিষয়ে তার অজ্ঞতার কারণেই তিনি জাতীয় সংগীতের সুরে একটি ইসলামিক গান তৈরি করেন। এ সংগীতটি ফেসবুকে ও ইউটিউবে পোস্ট করার পর অনেকেই এটাকে জাতীয় সংগীত বলে মন্তব্য করে, প্রকৃতপক্ষে তিনি কখনোই তা জাতীয় সংগীত বলে অবহিত করেননি।’-জাগো নিউজ