একে অপরের বাল্য বন্ধু। দুই জন দুই ধর্মের। একজন হিন্দু আরেকজন মুসলমান। ছোটবেলা থেকেই গভীর বন্ধুত্ব দুই জনের। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বার্ধক্যজনিত রোগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান মীর হোসেন। বন্ধুর মৃত্যুর খবরে শোকে কাতর হয়ে পড়েন দীর্ঘদিনের সাথী সুধীর বাবু।
বন্ধুর বিদায়ের বেলায়ও সঙ্গ ছাড়েননি সুধীর বাবু। জানাজার নামাজে অংশ না নিলেও মাঠে এসে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। বন্ধু হারানোর বেদনায় সুধীর বাবু নামাজ চলাকালীন পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে চোখের পানি ফেলতে থাকেন। বিষয়টি উপস্থিত সকলের হৃদয় ছুঁয়েছে। হৃদয়স্পর্শ ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হলে মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী বাজারের ব্যবসায়ী মীর হোসেন সওদাগর ও সুধীর বাবু বাল্যকালের বন্ধু। মীর হোসেন সওদাগর মুদি দোকানের ব্যবসা করেছেন দীর্ঘদিন ধরে। সুধীর বাবুও ব্যবসা করতেন একই বাজারে। মঙ্গলবার রাতে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান মীর হোসেন। বন্ধুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শোকে কাতর হয়ে পড়েন দীর্ঘদিনের সাথী সুধীর বাবু।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জানাজা চলাকালীন সুধীর বাবু পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানাজা শেষে উপস্থিত সকলে তার এ অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখে আবাক হয়েছেন। তার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হলে মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বন্ধুত্ব এমনই হওয়া উচিত বলে লিখেছেন ফেসবুকে ব্যবহারকারীরা।
অনেকে আবার লিখেছেন, সত্যিকারের বন্ধুত্ব আসলেই এমন হয়। যে বন্ধুত্ব জাত দেখে না, ধর্ম দেখে না, ধনী-গরিবের ভেদাভেদ চেনে না।
গোলাম মাওলা শিপু নামে গুণবতী বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, মীর হোসেন সওদাগর মুদি ব্যবসা করতেন। বুধবার সকালে গুণবতী গ্রামে তার বাড়ির কাছেই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করতেন। এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে তার কদর ছিল। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।