কার্যালয়ে ডুকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ১৭নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল (৫০) ও আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহাকে (৫৫) এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যার সময় হিট স্কোয়াডে ছিলো ছয়জন সন্ত্রাসী। এমনটাই দাবি করছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, খুনের আগে মামলার ৫নম্বর আসামি সাজনের বাসায় বৈঠক করা হয়েছিলো।
সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা তথ্যনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছি হিট স্কোয়াডে ছিলো ছয়জন। তারা হলেন- এজহারনামীয় ১নম্বর আসামি শাহ আলম, ২নম্বর আসামি জেল সোহেল, ৩নম্বর আসামি সাব্বির হোসেন, ৫নম্বর আসামি সাজন, এজাহারবহির্ভুত স্থানীয় নাজিম নামে এক যুবক ও ফেনী থেকে আগত অজ্ঞাত এক সন্ত্রাসী। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শাহ আলম ও নাজিমকে চিহ্নিত করেছি।
তিনি আরো বলেন, অনুসন্ধানে আমরা আরো জানতে পেরেছি যে, এজহারনামীয় আসামি সাজনের বাসায় বৈঠক শেষে কিলিং মিশনে আসে অন্য আসামিরা। কিলিং মিশনে থাকা অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ওই ছয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলের অদূরে সংরাইশ এলাকার মোহাম্মদ রাব্বি ইসলাম অন্তুর বাসায় বৈঠক করে এবং দুপুরের খাবার খায় সেখানে। এ মামলার এজাহারভুক্ত ৮নম্বর আসামি জিসান মিয়া ও মোহাম্মদ রাব্বি ইসলাম অন্তু নামের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার বিকেলে অন্তু কুমিল্লার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এদিকে, কাউন্সিলর সোহেল ও হরিপদ হত্যায় অংশ নেওয়াদের আরেকটি ভিডিও হাতে পেয়েছে পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হওয়া ৩২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গুলি ছুড়তে ছুড়তে দৌঁড়াচ্ছেন এক নম্বর আসামি শাহ আলম ও অজ্ঞাত এক যুবক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার বলেন, এজাহারে নাম না থাকলেও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, শাহ আলমের সঙ্গে থাকা যুবকের নাম নাজিম। তার বাড়ি কুমিল্লা নগরীতে। তিনিও ওই হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন।
গত ২২ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নগরীর পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ওই দু'জন। কাউন্সিলর সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। নিহত হরিপদ সাহা নগরীর ১৭নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরো পাঁচজন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জোড়া খুনের ঘটনায় গত ২৩ নভেম্বর রাতে কাউন্সিলর সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আলোচিত এই জোড়া খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।