এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রীতিমতো অবাক হবেন, পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করায় ভাইদের সঙ্গে অভিমান করে ১৬ বছর জঙ্গলেই কাটিয়েছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মুজিবুর রহমান। জঙ্গলে জরাজীর্ণ এক ডেরা তৈরি করে শিয়াল-সাপ-বিচ্ছুর সঙ্গে অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটিয়েছেন তিনি।
স্বেচ্ছায় নির্বাসনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর রোববার (২৮ মে) ঘটনাস্থলে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার ব্যক্তিবর্গ। তাদের কাছে মানবেতর জীবনযাপনের গল্প বলেছেন মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, সৎ ভাইয়েরা পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে আমাকে বঞ্চিত করেছে। এ জন্য জঙ্গলেই ঠাঁই নিয়েছি। জঙ্গলে থাকায় সংসার করা হয়নি। কাঁচপুর মালেক জুট মিলে চাকরি করে সৎ ভাই জহিরুল ইসলামকে বিএ পাস করিয়েছি। সেই জহিরুল ইসলামই আমার পৈত্রিক সম্পত্তির ১০৫ শতাংশ জমির ৮৫ শতাংশ লিখে নিয়েছে। আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
মুজিবুর রহমান বলেন, বিয়ে করে বউ রাখার ঘর নেই, তাই বিয়েটা করতে পারিনি। অর্ধাহারে, অনাহারে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড়, আর শেয়ালের হাঁকডাকের মধ্যেই খুপরির মধ্যে পড়ে আছি। কখনও ভাত আর আলু সিদ্ধ করে লবণ-মরিচ দিয়ে, কখনও শুকনো খাবার খেয়ে থেকেছি। শিয়াল-সাপ-বিচ্ছু কখনও আমার ক্ষতি করেনি। ক্ষতি যা করার মানুষ করেছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে মুজিবুর রহমানের ভাইদের পাওয়া যায়নি। তবে মুজিবুরের ভাই ফরিদুল আলমের ছেলে আল-আমিন বলেন, আমার কাকা খুব অভিমানী। দাদার জায়গা জমি এখনও ভাগ হয়নি। তবে জহিরুল ইসলাম চাচা কিছু জমি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। মুজিবুর চাচার পাওনা বুঝিয়ে দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, মজিবুর রহমানকে তার পৈত্রিক জমির কাগজপত্র নিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলা হয়েছে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে তার পাওনা জমি উদ্ধার করে দেওয়া হবে। তার আবাসনেরও ব্যবস্থা করা হবে।