রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৭:০২:২০

‘দুইটারে আজীবনের জন্য একেবারে শুয়াইয়া দিয়া আইছি’

‘দুইটারে আজীবনের জন্য একেবারে শুয়াইয়া দিয়া আইছি’

কুমিল্লা : গতকাল ছোট দুই ভাই জয় (৮) ও মনিকে (৬) গলাটিপে হত্যা করার পর ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন নিহতদের সৎভাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ'র ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র সফিউল ইসলাম ছোটন।

ওই সময় ভাইকে দেখতে পায় ছোট বোন তানজিনা।  সে ভাইয়ের কাছে জয় আর মনির কথা জানতে চায়।  ‘ওরা ঘুমিয়ে আছে, বিরক্ত করা ঠিক হবে না- এমন কথা বলে ছোটন বের হয়ে যায়।

কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে আসেন তিনি।  তার বোন আবারো প্রশ্ন করলে তাকে লাথি দিয়ে বেরিয়ে যেতে বলে।  যাওয়ার পথে এক প্রতিবেশীকে তিনি বলে যান, ‘ওই দুইটারে আজীবনের জন্য একেবারে শুয়াইয়্যা দিয়া আইছি।’

পারিবারিক কলহের জের ধরে সহোদর দুই শিশু ভাইকে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছোটন।  নিহত দুই সহোদরের নাম মেহেদী হাসান জয় ও মেজবাউল হক মনি।

অভিযুক্ত সফিউল ইসলাম ছোটন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র ফাইনাল বর্ষের ছাত্র।

শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে কুমিল্লার ঢুলিপাড়া চৌমুহনী এলাকার নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানাজানি হয় বিকেলে।

রোববার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে দুই সহোদরের মরদেহ তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।  এসময় মরদেহ একনজর দেখার জন্য হাজারো মানুষ ভিড় জমায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দক্ষিণ ঢুলিপাড়ার মুদি দোকানি আবুল কালামের বাড়িতে।

এদিকে দুই শিশু সহোদর হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন নিহত দুই শিশুর মা রেখা বেগম।  সদর দক্ষিণ থানায় রোববার সকালে মামলাটি করেন তিনি।

পুলিশ জানায়, মামলায় নিহতদের সৎভাই ছোটনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ছোটন পলাতক রয়েছেন।

এদিকে জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল ও পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন নিহত দুই শিশুর বাড়িতে যান।  তারা শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন।  জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হয়।  

ঘটনার দিন দুপুরে নিহত শিশুদের বাবা আবুল কালাম তার দ্বিতীয় স্ত্রী রেখা বেগমকে নিয়ে রেখা বেগমের মায়ের কুলখানিতে ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার শালদানদী গ্রামে যান।  জয় ও মনিকে প্রথম স্ত্রী রোকেয়া বেগম, ছেলে ছোটন ও মেয়ে তানজিনাদের বাসায় রেখে যান।

বিকেলে বাসায় ফিরে বিছানায় দুই শিশু সন্তানের মরদেহ দেখতে পান।  এ ঘটনার পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও তার দুই সন্তান পলাতক রয়েছে।  

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ছোট শিশুটির গলায় দড়ি পেঁচানোর দাগ রয়েছে।  বড়টির গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে