কুমিল্লা : কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনু হত্যার আলোচিত ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশকে।
এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে এম মনজুর আলম।
তিনি জানান, শুক্রবার রাতে ডিবিতে মামলা হস্তান্তরের পর শনিবার বিকেলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তনুর মা, ভাই ও চাচাতো বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মামলার ‘রুটিন ওয়ার্ক’ হিসেবে তনুর স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহেও খুনি শনাক্ত কিংবা গ্রেপ্তার না হওয়ার পর তদন্তভার ডিবিতে দেয়া হয়। কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য দ্রুত উদঘাটনের জন্য মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, অনেকগুলো মোটিভ বের হয়েছে। রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে দিনরাত।
দেশজুড়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করতে র্যাব কাজ করছে জানিয়ে বাহিনীর প্রধান বেনজীর আহমেদ ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেছেন, শিগগিরই রহস্যের জট খোলার আশা করছেন তারা।
র্যাব-১১ অধিনায়ক খোরশেদ আলম কুমিল্লায় সাংবাদিকদের জানান, মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর থেকে তনুর বাবা-মা, দুই ভাই ও চাচাত বোনকে শুক্রবার কুমিল্লায় র্যাব কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের পর তনুর পরিবারের সদস্যরা কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুরে তাদের ভাড়া বাড়িতে ফেরত যান। তনুকে দাফন করতে মির্জাপুর গিয়েছিলেন তারা।
গত ২০ মার্চ রাতে অলিপুরেই তনুকে হত্যা করা হয়। খুনের আগে তাকে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছিল বলে পুলিশের ধারণা।
তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলাটির তদন্তই এখন ডিবি করবে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী তনু কলেজ থিয়েটারে যুক্ত ছিলেন। তিনি টিউশনি করিয়ে ফেরার পথে খুন হন।
ইয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তাদের বাসা থেকে ২০০ গজ দূরের বাড়িতে ছাত্র পড়াতে যেতেন তনু। আর তনুর লাশ পাওয়া গিয়েছিল বাসা থেকে ১০০ গজ দূরে একটি কালভার্টের কাছে।
সেনানিবাসের মতো সুরক্ষিত এলাকায় এই তরুণীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো.হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, আইএসপিআর থেকে বক্তব্য দিয়েছে, যে কোনো ধরনের সহযোগিতা লাগবে উনারা করবেন। সেবাহিনীর কর্মকর্তারা মামলার রহস্য উদঘাটনে যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন।
তনুর বাবা যে মামলা করেছেন, তাতে অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
২৭ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস