কুমিল্লা: ‘রবিউল কি হইছে তোর, থাকতে চাচনি এলাকাত, নাকি হিডি (পিটিয়ে) দৌঁড়াই দেন লাগবো। তুই কইলাম বেশি বাড়াবাড়ি করছ, তোর গোস্ত খুল হালাইয়ুম কিন্তু অ্যাই, তুই আমারে ছিনস, একদম গোস্ত খুলি ভাগ করি হালাইয়ুম, একটা কথা কইলে........., তুই আমাকে চিনস তোর গোস্ত খুলি হালাইয়ুম কিন্তু অ্যাই। ........দলের বাইরে কাজ করস আবার রংবাজি করস, তোরে একদম টাঙাই হালাইয়ুম, তুই বেশি ভাড়ি গেছত, নির্বাচনে কাজ কইল্লে আমার করবি, আমার কাজ না কইল্লে তোর গোস্ত খুলি গাছো টাঙাই হালাইয়ুম’।
চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের মৈশাতুয়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল এভাবেই মুঠোফোনে হুমকি দিচ্ছিলেন ওই ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো.রবিউল হোসেন হৃদয়কে। রবিউলের অপরাধ তিনি এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোক্তার হোসেন সুমনের (আনারস) কর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
মৈশাতুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মো. রবিউল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মোস্তফা গত পাঁচ বছর আমাদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। এলাকার ও দলীয় প্রতিটি কর্মী তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এবারও তাকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে দলীয় প্রার্থীর বাইরে গিয়ে একজন ভালো মানুষের নির্বাচন করছি। হ্যা, দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করতে পারে, কিন্তু তিনি আমাকে টুকরো টুকরো করতে পারেন না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চেয়ারম্যান মোস্তফা ও তার ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। আমাদের অনেকে মোস্তফার ভয়ে রাতে বাড়িতে ঘুমুতে পারছি না। তাই আমরা এমপি সাহেবকে (এমপি মো.তাজুল ইসলাম) বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
এদিকে, এসব ঘটনায় বুধবার সকালে মৈশাতুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোক্তার হোসেন সুমন তার কর্মীদের উপর হামলা, অব্যাহত হুমকি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও তার কর্মীদের নিরাপত্তা চেয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। তবে এতেও হুমকি বন্ধ নেই বলে জানা গেছে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোক্তার হোসেন সুমন অভিযোগ করে বলেন, মোস্তফা কামাল নিজে ও তার বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে প্রতিদিন ইউনিয়নের কোথাও না কোথাও আমার কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা, হুমকি ও তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এলাকা থেকে চলে যেতে বলছেন। বিষয়গুলো একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও এখনও মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান মোস্তফার মুঠোফোন একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জের মৈশাতুয়া ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মফিজ উদ্দিন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইউসুপ আলী বলেন, আমি এষনও অভিযোগ হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানার ওসি এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করা -মানবকন্ঠ
২৮ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ