কুমিল্লা : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন তার বাবা-মা।
এজন্য তারা কুমিল্লা সেনানিবাসের সার্জেন্ট জাহিদ, তার স্ত্রী ও সিপাহী জাহিদকে দায়ী করেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে সপ্তমবারের মতো তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে আনলে কার্যালয়ে ঢোকার আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তারা।
তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী মো. ইয়ার হোসেন। তার বাবা ও মা আনোয়ারা বেগম বলেন, সার্জেন্ট জহিদ ও সিপাহী জাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তনু হত্যাকাণ্ডের সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।
তারা বলেন, বারবার আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে আমরা ক্লান্ত। যাদের বাসায় পড়াতে গিয়ে তনু খুন হয় তাদের কাউকেই ঠিকমত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। তাদের বাসার শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করি।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, সেনাবাহিনীর স্টাডি ইউনিটের একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে অনুরোধ করা হয়েছিল তনুকে। ওইখানে তনু গান না গেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সিলেট ভ্রমণে যায়।
তিনি বলেন, পরে তারা কুমিল্লা থেকে খোকন ও শান্তা নামে দুই শিল্পীসহ একদল শিল্পীকে টাকার বিনিময়ে অনুষ্ঠানে আনেন। এ থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে তনুকে হত্যা করা হয়।
তনুর মা বলেন, এর বাইরে যদি আর কোনো রহস্য থাকে তাও খুঁজে বের করা দরকার। আক্রোশের কারণেই তনুকে হত্যা করা হয়েছে। তার গোটা শরীরে মারের আঘাতের চিহ্ন ছিল। গান না গাওয়ার আক্রোশেই তাকে খুন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তনুর গান করার কথা ছিল, বৃহস্পতিবার চলে যায় সিলেট। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে আসে। রোববার ৭টায় তো তাকে মেরেই ফেলল।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, রাস্তা দুই থেকে তিন ঘণ্টা বন্ধ করে রাখা হয়। কেন রাখা হয়? আমার মেয়েকে মেরে লাশ ফেলা হয় জঙ্গলে। সার্জেন্ট জাহিদ আর জাহিদের স্ত্রী জানে।
তিনি বলেন, জিওসি কমান্ডার আর আর্মি ইউনিটের সবাই জানে। আর্মির লোক মেরেছে আবার নাম বললে ধমকায় কেন? আমি কমান্ডারকে বলতে পারি, আপনার লোকে আমার মেয়েকে মেরেছে, এ কথা আপনিও জানেন।
আনোয়ারা বলেন, আমার মেয়ের চুল কেটে দেয়া হয়েছে। শরীরের প্রতিটা অঙ্গে মারধরের চিহ্ন।
মঙ্গলবার তনুর পরিবারে চার সদস্যসহ মোট ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। ঢাকার সিনিয়র বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দের নেতৃত্বে সিআইডির একটি টিম এ জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রোববার রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে সোহাগী জাহান তনুর লাশ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। এ হত্যাকাণ্ডের ৫১ দিন অতিবাহিত হলেও কাউকে আটক করতে পারেনি সিআইডি।
১০ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম