লক্ষ্মীপুর: বিমান বন্দর থেকে কাতার প্রবাসী সবুজকে আনতে গিয়ে ফেনীতে মাইক্রোবাসের সঙ্গে গরুবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে নিহত হন লক্ষ্মীপুরের ছয়জন। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ পাঁচ সদস্য রয়েছেন।
গতকাল রবিবার (২০ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমান বন্দরে যাওয়ার পথে ফেনীর মুহুরীগঞ্জ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারীর মটবী ও চন্দ্রগঞ্জ গ্রামের বাড়িতে আহাজারিতে যেন আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। স্বজনরা শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, মাটিতে গড়াগড়ি করছেন। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছে প্রতিবেশীরা।
নিহতরা হলেন প্রবাসী সবুজের ছেলে নাহিদুল ইসলাম শুভ (৭) ও মাইদুল ইসলাম নোমান (২), শাশুড়ি জাহানারা বেগম (৫৫), ভায়রার মেয়ে পপি আক্তার (১৫), বোন রুনা আক্তার (৩৫) এবং মাইক্রোবাসের চালক আব্বাস মিয়া (৪০)। ঘটনাস্থলেই মারা যান সবাই।
চালক আব্বাস মিয়ার বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এবং অন্য সবাই একই উপজেলার মান্দারীর মটবী গ্রামের বাসিন্দা। সবার মরদেহ ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতদের স্বজনরা জানান, তিন বছর আগে ধার দেনা করে কাতার যান সবুজ মিয়া। ঈদ উপলক্ষে ছুটি নিয়ে রবিবার দিবাগত রাতে দেশে আসেন তিনি। তাকে আনতে মাইক্রোবাসযোগে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমান বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেন পরিবারের ১২ সদস্য।
ফেনীর মুহুরীগঞ্জ সুলতানা ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে তাদের মাইক্রোবাসের সঙ্গে গরুবোঝাই একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক এবং একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হন। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের আরও সাত যাত্রী আহত হন। আহতদের ফেনী ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মাথা, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক জখম হয়েছে।
নিহত জাহানারা বেগমের ভাই মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, 'এ মৃত্যুর কথা আমরা ভাবতেও পারি না। সবুজ ছুটি নিয়ে দেশে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে আসলো; আর এখন চিরদিনের জন্য ছয়জনের বিদায় হলো।' অসহায় পরিবারের জন্য সরকারের কার্যকর সহায়তার দাবি জানান তিনি।
ফেনীর মুহুরীগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ থানার ইনচার্জ মো. মাহবুব আলম বলেন, দুর্ঘটনায় দুই শিশু, তিন নারী ও এক পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য।