লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের ভেতরে পুলিশের সঙ্গে যুবলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। সেখান থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে শহরের তমিজ মাকের্টে জেলা যুবলীগের কার্যালয় ঘেরাও করে পুলিশ। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
আহতরা হলেন- সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলিম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) গিয়াস উদ্দিন, কনস্টেবল নয়ন পাল, মেহেদী হাসান ও সাংবাদিক মীর ফরহাদ হোসেন সুমনসহ আটজন। আহত পুলিশ সদস্যরা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আটকরা হলেন- সদর (পশ্চিম) উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহবুবুল হক মাহবুব, সদর (পূর্ব) যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রূপম হাওলাদার, যুবলীগ নেতা সাইমুন, ছাত্রলীগ নেতা আসিক আহমেদ ও মো. রনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার সকালে সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান ফজলু ও একই এলাকার দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে।
পরে স্থানীয়রা দুইজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এর আগে ফজলুকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি দেলোয়ার হোসেন কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান।
খবর পেয়ে আহত আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখতে কয়েকজন নেতাকে নিয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু হাসপাতালে যান। এ সময় টিপুর সঙ্গে থাকা লোকজন দেলোয়ারকে মারধর করেন। এতে বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে পুলিশ-যুবলীগ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত আটজন আহত হন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে অভিযান চালিয়ে যুবলীগের পাঁচ নেতাকে আটক করে। হাসপাতাল এলাকা থেকে যুবলীগ নেতাকর্মীদের কয়েকটি মোটরসাইকেল জব্দ করে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে জেলা যুবলীগ কার্যালয় ঘেরাও করে পুলিশ।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে রোগী দেখতে এসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে-পুলিশের মারামারি হয়। আহত ফজলুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দেলোয়ার পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেলা যুবলীগের সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমানের মোবাইল কল দিলেও রিসিভ করেননি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন বলেন, মারামারির ঘটনায় আহতদের দেখতে গেলে যুবলীগ নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।