লক্ষ্মীপুর থেকে : লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর হাফেজ আয়াত উল্যার বাড়ি থেকে মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে হিন্দু পরিচয়ে কালেমা পাঠ করে ধর্মান্তর হওয়া এক পরিবারের ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে তাদের আটক করা হয়।
জানা যায়, আ'টককৃতরা এর আগে ভারতীয় নাগরিত্ব গোপন রেখে বাংলাদেশে মুসলমান হিসেবে নিবন্ধন করে বসবাস করছিলেন। এরপরেও পুনরায় কালেমা পাঠ করিয়ে তাদের মুসলমান বানায় একটি মহল। বিষয়টি নিয়ে উপজেলাব্যাপী সকল ধর্মালম্বীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নারায়নপুর ডাক্তারবাড়ির মোসাম্মদ ফাতেমা বেগম ও আবদুল মজিদের ছেলে মনির হোসেন (৩৯) বিশ বছর পূর্বে অবৈধভাবে ভারতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে সংকর নামে ভারতীয় নাগরিত্ব নিয়ে একটি বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ভাড়া বাসার মালিকের মেয়ে রেখা অধিকারীকে বিয়ে করে। পরে রেখার জেঠাতো বোন সুজাতা অধিকারীকেও বিয়ে করেন।
দুই সংসারে মিতালী, শ্যাফালী, রুপালী, কোয়েল, শ্যামলী, রাজা, সুমা, রাজেস নামে ৮ সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি কয়েকমাস আগে সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশে এসে নিজে মনির হোসেন নামে (১৯ অক্টোবর ২০১৯) রামগঞ্জ উপলোর ইছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জম্ম নিবন্ধন করেন তিনি। এবং ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মুসলমান হিসেবে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের জম্ম নিবন্ধন করেন।
এর আগে বড় মেয়ে শ্যাফালী বেগমকে উপজেলার চন্ডিপুরে তার বড় বোন পারভিন বেগমের ছেলে পারভেজ হোসেনের সাথে বিয়ে দেয়। সেখানে আবদুর রহমান নামে এক নাতি রয়েছে। মাহফিলে তাদেরসহ পরিবারের ১১ জনকে কালিমা পাঠ করিয়ে পূনরায় মুসলমান বানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলাব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে শনিবার রাতে তাদের আটক করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, মনির হোসেন মুসলমান ছিল। সে ছোটবেলায় ভারতে চলে যায়। গত কয়েক মাস আগে সে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশে এসে মুসলমান হিসেবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। তার দুই মেয়ে জান্নাত আক্তার ও আয়েশা আক্তার হরিশ্চর মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণিতে এবং ছেলে আব্দুল্লাহ নামে হরিশ্চর নুরানী মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত। জামায়াতপন্থী একটি চক্র তাদের লোভ দেখিয়ে শুক্রবার মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে নিয়ে পূনরায় কালেমা পড়িয়ে ধর্মান্তর করেন।
রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ধর্মান্তর হওয়া ১১ জনের কাছে ভারতীয় পাসপোর্ট আছে। তারা নাগরিকত্ব গোপন করেছে। তাই তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিষয়টি রাষ্ট্রিয়, আমাদের হাইকমান্ড বিষয়টি দেখছে।