লক্ষ্মীপুর: কুমিল্লার ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কে শিক্ষা সফরে গিয়ে লক্ষ্মীপুর ইলেভেন কেয়ার একাডেমির শিশুছাত্রী ফৌজিয়া আরেফিন সামিউনের (৮) মৃ'ত্যু হয়েছে। তার মৃ'ত্যুতে কা'ন্না থামছে না মা-বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনদের।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক থেকে অসুস্থ অবস্থায় সামিউনকে উ'দ্ধার করে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃ'ত ঘোষণা করেন বলে জানান শিক্ষকরা। তবে শিক্ষকদের অসচেতনতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণেই শিশুটি মা'রা গেছে বলে অ'ভিযোগ পরিবারের। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি বলে দাবি পরিবারের।
শিক্ষকরা দাবি করেন, বনভোজনের সময় ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের একটি পুলে হাঁটু পরিমাণ পানিতে সামিউন অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খেলাধুলা করেছে। পরে ঠান্ডা লেগে তার খিঁ'চুনি দেখা দেয়। এ সময় সে বমিও করে। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃ'ত্যু হয়।
সামিউন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড সমসেরাবাদ এলাকার বাসিন্দা ও কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। সে লক্ষ্মীপুর ইলেভেন কেয়ার একাডেমির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে পূর্বঘোষিত বনভোজনের উদ্দেশ্যে কুমিল্লার ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কে যান প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সকালে সামিউনকে শিক্ষকদের দায়িত্বে বনভোজনের জন্য রেখে যান তার বাবা। অন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বনভোজনে গেলেও সামিউনের মা-বাবা কেউই যাননি। আর সামিউনের অন্য কোনো সহপাঠীও বনভোজনে যায়নি। পরে বনভোজন স্থলে অন্যান্যদের সঙ্গে সেও খেলা করছিল একপর্যায়ে শিশুরা পার্কের একটি পুলে হাঁটু পরিমাণ পানিতে খেলাধুলা করে। কিছুক্ষণ পরই ঠান্ডাজনিত কারণে খিঁচুনি এলে সামিউন বমি করে। এ সময় অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃ'ত ঘোষণা করেন।
এদিকে মেয়েটির বাবা গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকদের অবহেলার কারণেই আমার মেয়ের মৃ'ত্যু হয়েছে। মেয়েকে একা ছাড়তে অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকরা দায়িত্ব নেয়ায় বনভোজনে যেতে দিতে আমি বাধ্য হয়েছি। এ ঘটনায় মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
ইলেভেন কেয়ার একাডেমির অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, শিশু সামিউনের মৃ'ত্যু সবাইকে ম'র্মাহ'ত করেছে। এটি খুবই বেদনাদায়ক। মৃ'ত্যুটি মেনে নেয়াও খুব কষ্টদায়ক।
তার দাবি, ঠান্ডা লেগে সামিউন অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঠান্ডাজনিত কারণেই শিশুটির মৃ'ত্যু হয়েছে। বনভোজনে শিশুদের প্রতি দায়িত্বে তাদের কোনো অবহেলা ছিল না।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রেমানন্দ বলেন, শিশুটির মৃ'ত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ তার বাড়িতে যায়। সেখানে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিল বলে শুনেছি। তবে পুলিশ দেখে তারা পালিয়ে যায়৷ এ ঘটনায় লিখিত অ'ভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।