লক্ষ্মীপুরে বিয়ের নামে প্রতারণার মামলায় নুরজাহান স্মৃতি নামের এক নববধূকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৫ আগস্ট) আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্মৃতি সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার মৃত নুরনবীর মেয়ে। ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম মো. খোকন। তিনি সৌদিপ্রবাসী। তার বাড়ি কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামে।
ভুক্তভোগী প্রবাসী, মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্র জানায়, সৌদি প্রবাসী মো. খোকনের সঙ্গে মোবাইলে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নুরজাহান স্মৃতির বিয়ে হয়। দেনমোহরের নিশ্চয়তার জন্য প্রবাসীর বড় ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবের একটি চেক সুরক্ষা হিসেবে রেখে দেয় মেয়ের পরিবার। স্মৃতি স্বামীর গ্রামের বাড়িতে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে স্বামীকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে জেলা শহরের উপকণ্ঠে জমি কিনতে ১০ লাখ টাকা নেয় ওই নববধূ। এভাবে বিভিন্ন অজুহাতে খোকনের কাছ থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
জুন মাসে সৌদি থেকে দেশে আসেন খোকন। ১৯ জুন সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকায় মেয়ের বাড়িতে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। ওইদিন জোরপূর্বক স্মৃতির পরিবার খোকনের কাছ থেকে ৩০০ টাকার রেজিস্ট্রিকৃত স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা নেন। এতে স্মৃতিকে শারীরিক, মানসিক ও ফোনে কথা বলতে বাধা না দেয়া এবং খারাপ আচরণ না করাসহ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। এর আগে ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর মোবাইলে সৌদি থেকে ওই তরুণীকে বিয়ে করেন খোকন।
আনুষ্ঠানিক বিয়ের পর স্মৃতিকে খোকন তার বাড়িতে তুলে নিতে চাইলে কালক্ষেপণ শুরু করে মেয়ের পরিবার। এরমধ্যে হঠাৎ করে ১৮ জুলাই স্মৃতি লক্ষ্মীপুর আদালতে উপস্থিত হয়ে খোকনকে তালাক দেন।
এ ঘটনায় গত ২১ আগস্ট বাদী হয়ে কমলনগর থানায় নুরজাহান স্মৃতিসহ সাতজনের নামে প্রতারণা মামলা দায়ের করেন খোকনের বড় ভাই আবুল খায়ের মানিক।
অন্য আসামিরা হলেন-সালেহ আহম্মদ, মো. ইব্রাহিম, জেসমিন আক্তার, মো. রিংকু, আলী হায়দার চৌধুরী প্রিয় ও ঘটক মো. শাহজাহান। এরমধ্যে ঘটক শাহজাহান ছাড়া অন্য ছয় আসামি বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক ওই নববধূকে কারাগারে পাঠিয়ে অন্য আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
ভুক্তভোগী খোকন বলেন, স্মৃতিকে পছন্দ হওয়ায় তার সব শর্তে রাজি হয়েছি। সে বিভিন্ন অজুহাতে আমার কাছ থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিয়ের নামে সেসহ তার পরিবার পরিকল্পিতভাবে প্রতারণা করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, বিয়ের নামে স্মৃতি ও তার পরিবার প্রবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আদালত জামিন দিলেও স্মৃতিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। স্মৃতি এখন কারাগারে আছেন।সূত্র: জাগো নিউজ