লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বর্বর নির্যাতনের ঘটনার পর এবার তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে চরম আতঙ্কে ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারটি, বিচার না পেলে সপরিবারে আত্মহত্যা করার ঘোষণা দিয়েছেন ওই ছাত্রীর বাবা। এদিকে, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে একের পর এক বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনসহ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
ভিকটিম ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে ২৭ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে মাদ্রাসার কাছাকাছি পৌঁছলে রাসেলের নেতৃত্বে পাঁচ-ছয় জন বখাটে যুবক উল্লিখিত মাদ্রাসাছাত্রী কামরুন নাহারকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে। তার চোখ-মুখ বেঁধে পাশের বাগানে নিয়ে ছুরি ও ব্লেড দিয়ে হাত ও পায়ের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত করার পর তাকে বস্তায় ভরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পালিয়ে যায় বখাটেরা।
এরপর স্থানীয়রা ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। এ ঘটনায় ওই দিন ভিকটিমের মা পেয়ারা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় স্থানীয় বখাটে যুবক রাসেল, কিরণ ও ভুলুসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিনজনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। পরে অভিযুক্তদের মধ্য থেকে রাসেলকে গ্রেফতার করলেও অন্যদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ১০ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত স্বাভাবিক হতে পারেনি নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কামরুন নাহার জানায়, ঘটনার সময় ওরা ছয়জন ছিল। এর মধ্যে রাসেল, কিরণ ও ভুলুকে চিনলেও অন্যরা মুখোশ পরা ছিল বলে জানায়।অন্যদিকে, মামলা করার পর তা তুলে নিতে নির্যাতিত পরিবারকে অভিযুক্ত আসামিরা বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এমন অভিযোগ ও বখাটেদের বিচার দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন মাদ্রাসা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গ্রামবাসী ও স্থানীয় ছাত্র উন্নয়ন পরিষদ।
তারা প্রতিবাদে একের পর এক মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করছেন।ছাত্রীর বাবা নুরুল আলম জানান, আমার মেয়েকে নির্যাতন চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি তারা। মামলা করায় এখন আমার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। তাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিচার না পেলে সপরিবারে আত্মহত্যা করবেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ঘোষণা দেন তিনি।
এলাকাবাসী জানান, নুরুল আলমের সঙ্গে একই বাড়ির মো. বাবুলদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে বাবুলের ছেলেরা নুরুল আলমের মেয়েকে নির্যাতন করেছে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে গ্রামবাসী এখন সোচ্চার হয়ে উঠেছে।
৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে