বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:৪২:৫৩

আওয়ামী লীগের দুর্গে আওয়ামী লীগই কাণ্ডারি

আওয়ামী লীগের দুর্গে আওয়ামী লীগই কাণ্ডারি

অলিউল আহসান কাজল, মাদারীপুর থেকে : আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত মাদারীপুর-২ আসন। সদর উপজেলার ১০টি ও রাজৈর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে আসনটি গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩ হাজার ২৬১ জন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি, শ্রমিকনেতা ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এ আসনের এমপি। আগামী নির্বাচনেও তিনি এ আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী।

মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের মধ্য হাউসদি গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও রাজনৈতিক পরিবারে শাজাহান খানের জন্ম। পিতা মো. আচমত আলী খান ১৯৪৯ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

তিনি ১৯৫৪ থেকে ৭০ ও ৭৩ সালের প্রাদেশিক পরিষদ, গণপরিষদ এবং জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পিতার রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রজীবন থেকেই শাজাহান খান রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এক সময়ের জাসদ নেতা হিসেবে পরিচিত লাভ করলেও ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাদারীপুর-২ আসনের এমপি নির্বাচিত হন।

এরপর এই আসনে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক নির্বাচিত হন। একই সময়ে আব্দুর রাজ্জাক শরীয়তপুর জেলার একটি আসনেও নির্বাচিত হলে মাদারীপুর-২ আসন ছেড়ে দেন। একই বছর শাজাহান খান আওয়ামী লীগে যোগদান করলে উপনির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়।

তিনি উপনির্বাচনে ৯২ হাজার ৮৬২ ভোটের ব্যবধানে চারদলীয় প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বাচ্চু ভূঁইয়াকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের ৭ম, ৮ম ও ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এরপর তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন। মন্ত্রী হয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক অবদান রাখেন এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। তবে সবচেয়ে লক্ষণীয় হচ্ছে, তিনি প্রতি মাসেই দুই থেকে তিনবার এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে আসেন এবং তাদের সমস্যা, দুঃখ-দুর্দশা সমাধানসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নেন।

এদিকে এ আসনে বিএনপির কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো নয়। তারপরও এক ঝাঁক মনোনয়ন প্রত্যাশী নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করছেন। দলের কঠিন সময়ে যারা মাঠে সময় দিচ্ছেন ও কাজ করার চেষ্টা করছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহান্দার আলী জাহান।

এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মরহুম সিরাজুল ইসলাম বাচ্চু ভূঁইয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র মাদারীপুর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মনিরুল ইসলাম তুষার ভূঁইয়া আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন চাইবেন।

বিএনপির নতুন মুখ হিসেবে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ক্রীড়া সংগঠক হাবিবুর রহমান কাওসার হাওলাদার, আলহাজ সালেহ্‌‌ আহমেদ সালাম মুন্সি, জাতীয়তাবাদী সমবায় দল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ অ্যাডভোকেট খন্দকার জিল্লুর রহমান নানা ধরনের শুভেচ্ছা পোস্টার, ব্যানার ও স্থানীয় পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী, ইডেন কলেজের সাবেক ভিপি ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি হেলেন জেরিন খান বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বলেও শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে মনোনয়নের জন্য আবেদন করবেন। তবে সব প্রার্থীই একমত দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই সবাই কাজ করবেন।

অন্যদিকে প্রকাশ্য কোনো মিটিং-মিছিল না করলেও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির কাজী আবুল বাশার আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গোপনে গণসংযোগ শুরু করেছেন। গত সদর উপজেলা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে তিনি রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে তার নাম শোনা যাচ্ছে।

এক সময়ে মাদারীপুর জাতীয় পার্টির দৌরাত্ম্য থাকলেও এখন তা নিস্তেজের পথে। তবে, জেলার কোথায়ও জাপার দলীয় কোনো কার্যক্রম না থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে জাকারিয়া অপু হবেন জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী। এমজমিন
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে