মাদারীপুর থেকে : গত ২ এপ্রিল ভোররাতে মাদারীপুরের পদ্মায় শিবচর থানা পুলিশের উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত লাশের নাম-পরিচয় শনাক্ত করেছেন তার স্বজনরা। তার নাম ইকবাল মাহমুদ।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং গ্রামের মৃত শাহ মোহাম্মদ এমরানের একমাত্র ছেলে ইকবাল। তিনি ওই গ্রামের সম্ভ্রান্ত ও ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। তবে ইকবালের মৃত্যুর কোনো কারণ বলতে পারছেন না তার পরিবার ও স্বজনরা।
ইকবালের বোন সাদিয়া ইসরাত জানান, ইকবাল চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং (সিএ) পড়ার কারণে ঢাকার পান্থপথ এলাকার ইউটিসি বিল্ডিংয়ে ইন্টার্ন করতেন। গত ৩১ মার্চ সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরেননি। ৩-৪ দিন খোঁজাখুঁজির পর কোথাও তাকে না পেয়ে তেজগাঁও থানায় একটি জিডি করেন।
পরে মোবাইলে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ইকবালের সর্বশেষ অবস্থান শিবচরে বলে জানায় পুলিশ। তাই পরিবারের স্বজনরা ইকবালের সন্ধানে শনিবার সকালে শিবচর থানায় আসেন। নিহত ইকবাল মাহমুদ চার বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই। তাদের বাবা গত এক মাস আগে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
শিবচর থানা পুলিশ ও তেজগাঁও থানা জিডির সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের পদ্মা নদী থেকে গত ২ এপ্রিল ভোররাতে পদ্মা নদীতে পুলিশ আনুমানিক ২৮ বছরের এক যুবকের ভাসমান ও গলিত লাশ উদ্ধার করে। তাৎক্ষণিক ওই লাশের কোনো নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাই অজ্ঞাতপরিচয়ে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠানো হয়। পরে বেওয়ারিশ হিসাবে আঞ্জুমানে মফিদুলের মাধ্যমে লাশ সেখানে দাফন করা হয়।
ইকবালের মামাতো ভাই ইনায়েত রহিম জানান, ইকবাল বিচারপতি প্রয়াত আমিরুল কবিরের নাতি। ইকবাল কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং গ্রামের সম্ভ্রান্ত ও ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। এ হত্যার পেছনে গভীর রহস্য রয়েছে বলে তিনি প্রাথমিক ধারণা করছেন।
তিনি আরও জানান, নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ইকবালের ব্যবহৃত ল্যাপটপ সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তার বড় বোনের ঢাকার বাসার ঠিকানায় আসে। এরপর থেকে পরিবারের লোকজন হন্যে হয়ে তাকে খুঁজতে থাকে।
শিবচর থানার ওসি মো. জাকির হোসেন মোল্লা জানান, ওই লাশটি ইকবাল মাহমুদ নামে এক ছাত্রের। তিনি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার হারবাং গ্রামের মৃত শাহ মোহাম্মদ এমরানের একমাত্র ছেলে। ইকবালের পড়নের জুতা কাপড়-চোপড় দেখে তার বোন সাদিয়া ইসরাত ও তার স্বামী সালাউদ্দিন শনাক্ত করেন।
যেহেতু লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে- তাই ইকবালের লাশ উত্তোলন করে তার স্বজনরা নিয়ে যেতে ইচ্ছাপোষণ করেন। সে অনুযায়ী, মাদারীপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লাশ ফেরত নেয়ার আবেদন করেছে তার পরিবার।