শিবচর (মাদারীপুর) : ঈদ উপলক্ষে মাদারীপুরের শিবচরে ঈদের বাজারগুলো জমে উঠেছে। হরেক রকম বাহারি পোশাকে ভরে থাকা বাজারগুলোতে এখন উপচে পড়া ভিড়। ভিড় রয়েছে লুঙ্গি-স্যান্ডেল-জুতার দোকানেও। এর মাঝেই ব্যবসার পাশাপাশি যাদের সামর্থ্য নেই সেই সকল শিশুদের হাতে বিনামূল্যে পোশাকসহ নানান সামগ্রী তুলে দিয়ে তানজিল নামের এক ব্যবসায়ী অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
সরেজমিন একাধিক সূত্রে জানা যায়, রমজানের শুরু থেকে প্রচণ্ড গরম, ঝোড়ো বৃষ্টি মাথায় নিয়েই উপজেলার মার্কেটগুলোতে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। শিবচর পৌরবাজার, ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী পৌর সুপার মার্কেট, পাঁচ্চর, চান্দেরচরসহ মার্কেটগুলোতে এখন ক্রেতা আর ক্রেতা। এর মধ্যে নারী ও শিশুদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। শুধু শাড়ি বা ড্রেস কিনেই নয় এর সাথে মিলিয়ে ব্যাগ, কসমেটিকসও কিনতে ভিড়ের কমতি নেই। এ বছর ঈদের বাজারগুলোতে দামের ঝাঁঝ থাকলেও ক্রেতার কমতি নেই। বিশেষ করে ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের নামকরণের ড্রেসের ওপর নারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।
রংবেরঙের এই পোশাকের ব্যবসার মাঝেই পৌর বাজারের ইলিয়াস তালুকদার মার্কেটের তানজিল আহমেদ খান নামক এক ব্যবসায়ী ব্যবসার পাশাপাশি যাদের কেনার সামর্থ্য নেই সেই শিশুদের হাতে বিনামূল্যে জামা-কাপড়, জুতা-স্যান্ডেলসহ বিভিন্ন সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। প্রতিদিন কেনাবেচার সাথে সাথে তানজিলের কিডস ক্লাব নামক প্রতিষ্ঠান থেকে বিনামূল্যে দরিদ্র শিশুদের মাঝে তিনি বিনামূল্যে পোশাক দিচ্ছেন।
ক্রেতা শারমিন সুলতানা বলেন, ঈদের কেনাকাটা করতে করতে তালুকদার মার্কেটে এসে এখানকার এক ব্যবসায়ীর দুঃস্থ শিশুদের জন্য বিনামূল্যে ঈদের পোশাক বিতরণ সাইনবোর্ড দেখে অবাক হয়েছি। কিছু সময় দাঁড়িয়ে থেকে ব্যবসায়ী তানজিল ভাইকে বেশ কয়েকজন শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে যার যার পছন্দসই ঈদের পোশাক বিতরণ করতে দেখলাম। এটা ভালো উদ্যেগ।
দরিদ্র কৃষক আলী হোসেন বলেন, আমি গরিব মানুষ, পাঁচজন ছেলে-মেয়েসহ আটজনের সংসার। সবাইরে ঈদের নতুন জামা-কাপড় ক্যামনে দিমু ভাবতাছিলাম। তখন একজন কইল এই মার্কেটের একজন ফ্রি জামা-কাপড় দেয়। তাই এই দোকানে আইসা আমার ছেলে-মেয়েরা টাকা ছাড়াই পছন্দমতো নতুন জামা, প্যান্ট পাইল। আল্লাহ তার ভালো করুক।
তানজিল আহমেদ খান বলেন, আমি গত দুই বছর থেকেই ঈদ উপলক্ষে রোজার শুরু থেকেই দুঃস্থ শিশুদের জন্য পোশাক, জুতা-স্যান্ডেলসহ বিভিন্ন সামগ্রী দোকানে রেখেছি। যারা আসে তাদের পছন্দসই সামগ্রী দিয়ে দেই। এতে নিজের কাছে খুব শান্তি লাগে। আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমার মতো এভাবে যদি তাদের দোকানের কিছু পোশাক দরিদ্র শিশুদের জন্য বরাদ্দ রাখে তাহলে দেশের সকল দরিদ্র শিশুরা ঈদে নতুন পোশাক পাবে।