মানিকগঞ্জ: সম্প্রতি একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে পাগলের ঘরে জন্ম নেওয়া ১৫ বছরের এক কিশোর তার দুঃখের কথা শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, তার বাবার স্বীকৃতি না থাকায় তার জন্মসনদ নাই। সেজন্য তিনি লেখাপড়া করতে পারছেন না। তার পাগল মা বর্তমানে অসুস্থ। তিনি তার বাবার স্বীকৃতি চান। মাকে সুস্থ করতে চান। লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতে চান। আবুল কাশেমের বাড়ি মানিকগঞ্জের পুটাইল ইউনিয়েনর ধল্লা গ্রামে।
আবুল কাশেম বলেন, আমার যে মা তিনি ছিলেন একজন পাগল। আমাদের পুটাইল ইউনিয়নের মানুষ তাকে ছকিনা পাগল বলে। আমি পাগলের ঘরে জন্ম নেওয়া আবুল কাশেম। আমার বাসা মানিকগঞ্জ, আট নম্বর পুটাইল ইউনিয়ন, গ্রাম ধল্লা। সুনামের বাড়িতে আশ্রিত। আমাদের গ্রামে কিন্তু অনেক ছেলে-মেয়ে আছে তাদের মা-বাবা, টাকা দেয়, জামা কাপড় কিনে দেয়। নির্ভাবনায় তারা চলে। কিন্তু আমার লেখাপড়া না করলে – আমি যদি একবেলা কাজ না করি, না খেয়ে থাকতে হবে। আমার মা বর্তমানে খুবই অসুস্থ। এ পৃথিবীতে মা ছাড়া আমার কেউ নাই।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে বলবো ভাই, আমার শুধু একটাই আশা ছিলো। কি আশা জানেন? আমি লেখাপড়া করবো। একজন মানুষের মতো মানুষ হবো। কিন্তু সে আশাটা আমার পূরণ হলো না। কারণ একটাই আমার বাবা আমাকে পরিচয় দেয় না। ভাই আমি তো এই দুনিয়ায় কোনো দোষ করে আসি নাই। দোষ যদি করে থাকে আমার বাবা অথবা মা দোষ করেছে। আমি নিরপরাধ হয়ে এই দুনিয়ায় আসছি।
কাশেম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার একটা জন্মনিবন্ধনের জন্য আমার আজকে লেখাপড়াটা বন্ধ। কেন ভাই? আমার তো কোনো দোষ নাই। ভাইরে, আমি পাগলের ঘরে জন্ম নিছি। কেউ আমারে খেলতে নেয় নাই। কেউ কোনো দিন আমাকে মাঠে ডাইক্যা নেয় নাই। আমি খেলতে গেলে আমাকে খেদাইয়া দিছে। আমারে মারধর করছে।
তিনি আরও যোগ করেন, আমি টাকা-পয়সা চাই না, জমি জমা চাই না। আমি শুধু আমার বাবার স্বীকৃতিটুকু চাই। আমি শুধু চাই, আমি যেন লেখাপড়া করতে পারি। আমি কোনো জঙ্গি হতে চাই না। আমি সন্ত্রাসী হতে চাই না। আমি স্বাভাবিকভাবে সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই। আমাকে সেরকম একটা পথ প্লিজ আপনারা করে দেন।
আবুল কাশেম বর্তমানে একটি অটো রিকশা চালান। তার পাগল মাকে নিয়েই ধল্লা গ্রামে থাকেন।