মানিকগঞ্জ থেকে : ঈদের আনন্দ উবে গেছে গুলশানে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ অফিসার রবিউলের পরিবারের। পাঁচ বছরের ছোট্ট সামীর স্বপ্ন ছিল নতুন পাঞ্জাবি টুপি পরে বাবার সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়বে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেলো বাবা হারানো এই ছোট্ট শিশুটির। আর ঈদে রবিউলের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা উম্মে সালমার দিন কেটেছে কান্না আর স্বামীর স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে।
ঈদের দিন গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিমের বাড়ি মানিকগঞ্জের কাটিগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট শিশু সামী নতুন পাঞ্জাবি-টুপি পরে চাচা শামসুজ্জামানের হাত ধরে স্থানীয় ঈদগাঁ মাঠে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ শেষে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে বাবার কবর জিয়ারত করতে যায় সে। এসময় বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে কবরের দিকে তাকিয়েছিল সে। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সালমা, রবিউলের মা করিমুন্নেসা, ছোট ভাই শামসুজ্জামানের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে ঈদের পুরো দিনটি।
সালমা বলেন, ছেলেটা বলছে বাবা কই? বাবা কি আকাশে চলে গেছে। আকাশ থেকে নেমে বাবা কেনো আমাকে আদর করতে আসে না। তিনি বলেন, রবিউল বলেছিল ঈদে যদি আগে ছুটি না পাই তাহলে নামাজ শেষ করেই সোজা গ্রামে চলে আসবো। সবার সঙ্গে নামাজ পড়ে বাবার কবর জিয়ারত করবো। কিন্তু তার সে আশা পূরণ হয়নি। উল্টো ঈদের নামাজ শেষে সবাই ওরই কবর জিয়ারত করেছে।
সালমা আরো বলেন, আমার সামী তো ওর বাবাকে দেখেছে, বাবার আদর ভালোবাসা পেয়েছে কিন্তু আমার অনাগত সন্তান সে তো কখনোই তার বাবাকে পাবে না। জন্মের পর থেকেই পিতৃহীন হয়ে থাকতে হবে। রবিউলের একমাত্র ছোট ভাই শামসুজ্জামান জানান, ভাই নেই, ভাইকে ছাড়া ঈদের আনন্দ কাকে বলে আমাদের পরিবার জানে না।
শামসুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদের দিন দুপুরে ঈদ উপহার পাঠানো হয়েছে। ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার নুরে আলম সিদ্দিকী আমাদের পরিবারের কাছে উপহারগুলো তুলে দেন। উপহারের মধ্যে ছিল তিন লাখ টাকার চেক, ভাতিজা সামীর জন্য একটি মোটরসাইকেলের খেলনা, জামা-কাপড় ও ভাবি এবং মায়ের জন্য কাপড়। -মানবজমিন
১০ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস