ময়মনসিংহ থেকে: জন্মগতভাবে দুই পা অচল। তবু দমে যায়নি হেলেনা খাতুনের স্বপ্ন। বুকভরা দম নিয়ে দুই হাতের ওপর ভর দিয়ে নেমে পড়ে মাঠে। কখনো হামাগুড়ি দিয়ে আবার কখনো মায়ের সহযোগিতায় হুইল চেয়ারে চড়ে নিয়মিত স্কুলের ক্লাস করেছে। সে সুফলও সে পেয়েছে। এ বছর গফরগাঁও উপজেলার ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে মাড়িয়ে হেলেনা খাতুন জিপিএ-৪.৮৯ পেয়েছে।
হেলেনার বাড়ি গফরাগাঁও উপজেলার ঘাগড়া গ্রামে। আর দশটা শিশুর মতো সে হাঁটতে পারে না। হেলেনার মনে কষ্টের পাহাড়। সে সহপাঠীদের সঙ্গে একসঙ্গে হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারেনি। দৌড়াতে পারে না। খেলতে পারে না। তার অন্য সব সহপাঠীরা যখন স্কুল মাঠে খেলা করে, সে তখন চেয়ে চেয়ে দেখে। তার চোখের কোণে তখন বিন্দু বিন্দু নোনাপানি এসে জমা হয়। তবু সে দমেনি।
হেলেনা জানায়, ছোটবেলায় থেকেই তার পা দুটি অচল। বড় হওয়ার পরও শক্তি ফিরে আসেনি পায়ে। স্কুলের যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা ছিল ছোটবেলা থেকেই। শারীরিক অক্ষামতার জন্য পরিবার-স্বজন ও প্রতিবেশীরা তার পড়াশোনা নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করলেও হেলেনার কখনো মনে হয়নি সে পারবে না। বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে স্কুল। শুরুর দিকে মাফজিলা খাতুন কোলে করে নিয়ে যেতেন। একটু বড় হওয়ার পর হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেয় পরিবার। হুইল চেয়ারে করে একা একা স্কুলে যাওয়ার বায়না করলেও মা কখনো একা ছাড়েনি। হুইল চেয়ারের হাতলে সব সময় থাকতো মায়ের হাত।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি