আলম ফরাজী, ময়মনসিংহ (আঞ্চলিক): একজন সাবেক সংসদ সদস্যের (এমপি) ছেলে, আরেকজন অন্য সাবেক সংসদ সদস্যের বাড়ির বার্ষিক শ্রমিক। দুজনের দুইভাবে সাঁটানো পোস্টার নিয়ে চলছে বিতর্ক ও হাস্যরস। একজন বলছেন, তাঁর প্রশ্নবিদ্ধ পোস্টার সাঁটানো সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। এটি তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আরেকজন বলছেন, তাঁর পোস্টার সাঁটিয়েছেন ‘আগ্রহী জনতা’। ঘটনাটি ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নান্দাইল পৌর শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপজেলা পরিষদের দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে, ‘তারেক রহমানের (বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান) বন্ধু তথ্য-প্রযুক্তি বৈজ্ঞানিক ইয়াসের খান চৌধুরীকে এমপি হিসেবে দেখাতে চাই; প্রচারে উপজেলা, পৌর যুবদল ও ছাত্রদল’ শিরোনামে একটি পোস্টার। ইয়াসের সাবেক সংসদ সদস্য (১৯৯১) আনোয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে। জানতে চাইলে ইয়াসের বলেন, ‘এটা (তারেক রহমানের বন্ধু বলে উল্লেখ) এক ধরনের ষড়যন্ত্র। আমি একজন শিক্ষিত লোক হয়ে এ ধরনের মূর্খের কাজ করতে পারি না।’
ময়মনসিংহ জেলা উত্তরের যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল করিম বিপ্লব জানান, নান্দাইলে বিএনপির অন্য একটি পক্ষ রয়েছে। হয়তো কোনো পক্ষ তাঁকে (ইয়াসের) রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে পোস্টারটি লাগিয়েছে। এ ঘটনায় ইয়াসের খান বৃহস্পতিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ ডায়রিটি নেয়নি।
অন্যদিকে উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের বাসিন্দা এমডি হজরত আলী (৬০)। তিনি ১৫ বছর ধরে ওই গ্রামের বাসিন্দা চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য (১৯৭৯, ৮৮, ৯১ ও ২০০১) খুররম খান চৌধুরীর বাড়িতে বার্ষিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর ছবি সংবলিত পোস্টার স্থানীয় কানুরামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিভিন্ন দেয়ালে দেখা যায়। পোস্টারে লেখা, ‘আমি বাংলাদেশের নাগরিক, ‘আগামী নির্বাচনে এমপি হিসেবে নির্বাচন করতে চাই; প্রচারে নান্দাইলের সর্বস্তরের জনগণ’। লোকজন কৌতূহল নিয়ে পোস্টারটি দেখছে।
গতকাল শনিবার হজরত আলীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে অন্য একজনের সহায়তায় তাঁকে পাওয়া যায় মোবাইল ফোনে। তিনি বলেন, ‘এলাকার জনগণ আমার নামে পোস্টার করেছে। এতে আমি কোনো বাধা দিইনি। এই অবস্থায় কোনো পার্টি যদি আমাকে ডেকে নেয় তবে সেই পার্টির হয়ে নির্বাচন করব।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এলাকার লোকজনের কাছে (টাকা) চাইছি। তারা যদি দেয় তাহলে ঢাকায় যাইয়াম। না অইলে স্বতন্ত্র (নির্বাচন) করবাম।’
হজরত আলী একবার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করে ৫০০-৬০০ ভোট পেয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন। সরকারের ১০ টাকা কেজি দরের চালের জন্য কার্ড চেয়েও পাননি। এ জন্য তাঁর মধ্যে অপমান ও জেদ রয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।-কালের কণ্ঠ