আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ : ভ্যান চালকের ছেলে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। সাংসারিক অভাব অনটনের মধ্যেও স্বীয় মেধার স্বাক্ষর রেখেছে মোঃ মানুন হোসাইন। মা-বাবার স্বপ্ন পূরনে সাফল্যের নজীর রেখেছে। জামালপুর জেলার বাঁশচড়া ইউনিয়নের বটতলা গ্রামের মানুষজন ভ্যান চালক শহিদুল ইসলামের ছেলে মানুন হোসাইনের এ কৃতিত্বে আনন্দিত। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয় মেধাবী ছাত্র মানুন হোসাইন। ব্যাচ (এমবিবিএস) এম-৫৬ যার ভর্তি রোল-১৭৪।
মানুন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হতে চায়। ডাক্তার হয়ে গরীব ও অসহায় মানুষের সেবা করার ইচ্ছার কথা জানায় সে। গরীবের ঘরে জন্ম নেয়া মানুনের লেখাপড়া চলেছে প্রতিকূলতার মধ্যে। বাবা শহীদুল ইসলাম ভ্যান চালক কষ্ট করে হলেও ছেলের লেখাপড়াকে উৎসাহ যুগিয়েছেন। স্বপ্ন দেখেছেন তার ছেলে একদিন ডাক্তার হবে। মানুষের মতো মানুষ হবে। পিতার সেই ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিতে মানুনও নিজ মনোবলকে শানিত করেছে। অভাব অনটনের মধ্যে থেকেও অধ্যবসায়ে গভীর মনযোগ দিয়েছে। পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে। দরিদ্র ঘরে জন্ম নিয়েও সুশিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে অবিচল থেকে কলেজ জীবনে বড় হওয়ার স্বপ্ন রূপায়ন করেছে। লক্ষ স্থির থাকলে সাফল্য অজন সম্ভব তার উদাহরণ মানুন হোসাইন। নিজ গ্রামের বটতলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সে।
অর্থের অভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়াই যখন কঠিন,ছিল তখন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তার মামা। ময়মনসিংহ শহরে তার আশ্রয়ে এসে কলেজে ভর্তি হয়। মানুন টাকার অভাবে ভালো কোচিং করা হয়নি। কিন্তু মনযোগে ভাটা পড়েনি। মোমেনশাহী ক্যান্টেনম্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। অত:পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। মামা ও কয়েকজন শুভাকাংখীর সহযোগিতায় এ পর্যন্ত উঠে আসা সম্ভব হয়েছে। তার পক্ষে যদিও সামনে রয়েছে মেডিকেলে পড়াশোনা করার অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। সে প্রশ্নে রয়েছে দুশ্চিন্তা। তবে মানুনের বাবা ভ্যান চালক শহিদুল আশাবাদী। নিজে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বলে জানালেন এই ভ্যানচালক। সেই সাথে তার বিশ্বাস মানুষের সহযোগিতায় তার ছেলে একদিন ডাক্তার হয়ে বের হয়ে আসবে। গরীবের কষ্ট সে বুঝবে। সেদিন তার ছেলে বিনামূল্যে গরীবের চিকিৎসা সেবা দিবে। পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে অতিকষ্টে দিনযাপন করা সেই ভ্যান চালক শহিদুল তার মেধাবি ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন।-আমাদেরসময়.কম