ময়মনসিংহ থেকে : ''গাড়িতে এক সাথে গাদাগাদি করে কর্মস্থলে গেলে করোনার আশ'ঙ্কা। আর, না গেলে চাকরি হারানোর ভয়। আমরা কোন দিকে যাব। চাকরি গেলে না খেয়ে থাকতে হবে। চাকরির রক্ষার জন্যই ঘর থেকে বের হয়ে আসা। এখন বাকিটা আল্লার হাতে।''
আজ শনিবার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে ভালুকা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন কর্মস্থল গাজীপুরের কোনাবাড়িতে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা কয়েকজন শ্রমিক। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল থেকেই ট্রাক, খোলা পিকআপ, পিকআপ ভ্যান ও সিএনজিতে করে গাদাগাদি করে ভালুকার হয়ে গাজীপুর ও ঢাকার দিকে গেছেন হাজার হাজার শ্রমিক। উপায়ন্ত না দেখে মোটরসাইকেল চেপেছেন অনেকেই।
আবার গাড়ি ধরার আশায় কেউ হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল পথ। করোনা আক্রা'ন্ত হওয়ার আশ'ঙ্কাকে মনে চা'পা রেখেই কর্মে যোগদানের প্রব'ল আগ্রহে ছুটে গেছেন ওইসব শ্রমিক। পাশাপাশি, পুলিশের ভ'য়ে চালকগণ ট্রাক পিকআপ থেকে নামিয়ে দেওয়ার গন্তব্যে পৌঁছতে চ'রম দুর্ভো'গ পোহানোসহ সীমাহীন উৎকণ্ঠা ও শ'ঙ্কায় কেটেছে শ্রমিদের সময়। অপরদিকে, গণপরিবহন বন্ধের মাঝে চ'রম দুভো'র্গেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভালুকার শিল্প এলাকায় ছুটে এসেছেন হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী।
কথা হলে নান্দাইল থেকে আসা ২০-২২ বছর বয়সী একজন শ্রমিক জানান, তিনি গাজীপুর চৌরাস্তায় একটি প্যাকেজিং কারখানায় কাজ করেন। আগামীকাল রবিবার (০৫ এপ্রিল) থেকে তার কারখানা খোলা। মালিক পক্ষ থেকে কাজে যোগদানের কথা বলা না হলেও কারখানার একজন দাড়োয়ান তাকে ফোন করে কাজে যেতে বলেছেন। কাজে না গেলে চাকরিটা চলে যেতে পারে এই ভয়ে করোনার আশ'ঙ্কাতেও তিনি কাজে যোগ দিতে যাচ্ছেন।
তিনি নান্দাইলের হরিপুর থেকে অটোতে করে হোসেনপুর, পরে সিএনজিতে করে গফরগাঁও এবং ভাগে ভাগে ভালুকা পৌঁছে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। বাড়ি থেকে ভালুকা পর্যন্ত আসতে তাকে অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বি-গুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে। একই কথা বলছিলেন, নান্দাইল থেকে আসা আরো বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ।
কেন্দুয়া থেকে আসা একজন জানান, বাস বন্ধ থাকায় বাড়ি থেকে ভালুকা পর্যন্ত আসতে তাকে অনেক দুর্ভো'গ পোহাতে হয়েছে। কমপক্ষে চার দফা গাড়ি বদল করে তিনি ভালুকা পর্যন্ত এসেছেন। তাছাড়া, ভালুকা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছার অনেক আগেই তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে হেঁটে ভালুকা বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন। গাড়ির ধ'রার জন্য হাটছেন। আগামীকাল রবিবার (০৫ এপ্রিল) থেকে কাজে যেতে হবে। অবশেষে পায়ে হেঁটে হলেও তাকে কর্মস্থলে পৌঁছতেই হবে।