ময়মনসিংহ: তিন বছর বয়সেই বাবা নেই। অভাবের সংসারে মা করেন দিনমজুরি। তাই সংসারের খরচ যোগাতে ছেলে সুজন মিয়া (১৬) নিজ এলাকাতেই রিকশা চালায়। কখনো রাজমিস্ত্রীর সহযোগি হিসেবেও কাজ করে। জীবন ল'ড়াইয়ের ক'ঠিন পর্বে কিশোর সুজন এবার এসএসসি পাশ করেছে। শিক্ষা ও কর্ম দুটোই তার কাছে গুরুত্বপূর্ন। স্বপ্ন সাজাতে তাই সুজনের উচ্চারন -‘রিকশা চালামু, পড়াশুনাও করমু’।
সুজন মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলায়। ব্রহ্মপূত্র নদের অপরপাড়ে চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়নের রাজগঞ্জ গ্রামে মা ও ছেলের সংসার। বাবা আদম আলী মা'রা গেছেন সুজন মিয়ার বয়স যখন তিন বছর তখন। একমাত্র ছেলে হিসেবে ছোটবেলা থেকে সুজন মাকে সাহায্য করতে দিনমজুরি শুরু করে। তবে কষ্টের জীবনে সে লেখাপড়া ছাড়েনি। এবছর লেতু মন্ডল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সুজন মিয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৩৯ পেয়ে পাশ করেছে।
সুজন মিয়ার সাথে আলাপে জানা যায়, পরীক্ষার সময়ও রিকশা চালিয়েছে সে। প্রায় দেড় বছর ধরে এলাকাতে নিয়মিত রিকশা চালিয়ে সংসারে খরচ যোগায় সুজন। রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ শিখছে। রিকশার চালক সুজন মিয়া শহরের কলেজে ভর্তি হতে চায়। পড়ালেখা ও কর্ম কোনটাই হা'রাতে চায়না সে। তার বক্তব্য- ‘পড়াশুনা করমু, রিকশাও চালামু’।
ছাত্র সুজন মিয়া সর্ম্পকে লেতু মন্ডল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম চম্পা বলেন, ‘ছেলেটি কষ্ট করে বড় হয়েছে। কিন্তু পড়ালেখা থেকে সরে যায়নি। রিকশা চালিয়েছে, দিনমজুরি করেছে, আবার ক্লাশও করেছে। তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’