এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ‘লেখাড়াতে যে কোনো লজ্জা নাই তা প্রমাণ করে দিলেন আমার আব্বা। এক টেবিলে পড়ে দুইজনই এসএসসি পাস করেছি। আব্বা পেয়েছেন জিপিএ-৫ আর আমি জিপিএ-৪.৮৬। এতে আমি খুবই গর্বিত ও আনন্দিত। এখন সামনের পড়াশোনাও দুজন এক সাথে চালিয়ে যাব। ’
চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বাবা-ছেলে এক সাথে উত্তীর্ণ হওয়ার পর আনন্দে আপ্লুত হয়ে এ কথাগুলো বলেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাইরাউড়া গ্রামের রাকিবুল হাসান রায়হান। তার বাবা ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এখলাছ উদ্দিন নয়ন (৪৫)।
জানা যায়, ছেলে রায়হান গৌরীপুর সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স (বিএম) বিভাগে জিপিএ ৪.৮৬ ও বাবা নয়ন কেন্দুয়া উপজেলার মগরাইল আদর্শ কারিগরি ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
নয়ন বলেন, 'অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আর পড়া হয়নি। এতে নিজের কাছে খুবই খারাপ লাগত। পরে ইউপি মেম্বার হয়ে আরো বেকায়দায় পড়ে যাই। নিজে এসএসসি পাস না, এটা মানতে পারছিলাম না। তাই ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার পাশপাশি নিজেও পড়াশোনা শুরু করলাম। প্রথম প্রথম একটু লজ্জা লাগছিল। এ অবস্থায় পাশের কেন্দুয়া উপজেলায় গিয়ে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু করি। এখন পাস করে নিজেকে অনেক সুখী মনে হচ্ছে। তাছাড়া ছেলেও পাস করায় এক সাথে বিরল ঘটনা ঘটেছে। আমি আরো সামনে এগুতে চাই। '
অপর দিকে ছেলে রায়হান বলেন, 'আব্বা যখন পড়াশোনা শুরু করলেন তখন নিজের পড়ালেখায় আরো উৎসাহ বোধ করেছি। দুজনে মিলে আলোচনা করেই পড়ালেখা করেছি। ঘরে এক সাথে এক টেবিলে পড়েছি। কোনো কিছুতে আটকে গেলে দুজনে মিলে সমাধান করে পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছি। আব্বা একজন শিক্ষকের মতো আমার কাছে ছিলেন। এখন থেকে বাকি পড়াশোনা এক সাথেই করব। '
রায়হানের মা সমলা খাতুন বলেন, 'বাপ-পুতের পড়ালেহা দেইখ্যা আমারও অহন মনে অয় আমিও যদি এসএসসি পাস করতাম। এহন বুঝি পড়ালেহার বিকল্প নাই। '