শাহীন সরদার, বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ড. মোঃ তোফাজ্জল হোসেন ধান গাছের রোগবালাই দমন এবং গাছের সুঠাম বৃদ্ধির নয়া নভেল প্রজাতির উপকারী আন্ত:কোষীয় (endophytic) ব্যাকটেরিয়া সনাক্তকরণ ও নামকরণ করেছেন। নয়া গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার নাম Bacillus oryzicola যা আন্তর্জাতিক জার্নাল প্লান্ট প্যাথলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রাম পজিটিভ Bacillus প্রজাতির ২৯৯ টি ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে মাত্র ৩০ টি নভেল প্রজাতি। ৩১তম নয়া নভেল প্রজাতি হিসেবে জ্ঞান বিজ্ঞানের শাখায় এটি যাত্রা শুরু করল যা রোগ প্রতিরোধী (antagonistic) উপকারী ব্যাকটেরিয়া হিসেবে কাজ করে আসছে। ড. হোসেন গিয়াংসেং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (Gyeongsang National University) কোরিয়াতে তাঁর পিএইচডি গবেষণা কালে উক্ত ব্যাকটেরিয়া সনাক্ত করেন। ২৫০ টি আন্ত:কোষীয় (endophytic) ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে দুইটি স্ট্রেন (strain) YC7007 I YC7010 দ্বয়কে Bacillus oryzicola হিসেবে নামকরণ করেন। টাইপ স্ট্রেন (Type Strain) YC7010 কোরিয়ান কালচার সংরক্ষণ সেন্টারে (KACC) KACC 18228 নম্বরে সংরক্ষণ করা হয়েছে। একই নামে নামকৃত দুইটি স্ট্রেন (Strain) এর নামকরণ 16s RNA জীন, যা আন্তর্জাতিক জীন ব্যাংকে (NCBI, National Center for Biotechnology) KP203823 I KP201498 নাম্বারে সংরক্ষীত রয়েছে।
ড. মোঃ তোফাজ্জল হোসেন আরও জানান, ব্যাকটেরিয়ার আইসোলেট গুলোর জিন সিকুয়েন্স করে বায়ো-ইনফরমেটিক এনালাইসিস এবং বিভিন্ন শাররীয় এবং রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দুইটি স্ট্রেন এর নয়া নামকরণ হিসেবে Bacillus oryzicola নির্ধারণ করা হয়।
ধানের প্রধান তিনটি রোগ ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট, পেনিকেল ব্লাইট ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বাকানি নামক রোগত্রয়ের দমনে নয়া প্রজাতির ব্যাকটেরিয়াটি সফলভাবে কাজ করেছে বলে গবেষক ড. হোসেন জানান। দমনযোগ্য নিরামায়ক (control efficacy) হিসেবে উপকারী ব্যাকটেরিয়াটি ধানের ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট, পেনিকেল ব্লাইট এবং বাকানির বিরুদ্ধে যথাক্রমে ৬১.২%, ৬৫.২% এবং ৭৮% রোগ কমাতে সক্ষম যা স্বক্রিয়ভাবে রোগজীবাণু প্রয়োগ করে প্রমাণ করা হয়েছে।
উক্ত গবেষণাটি ড. হোসেন এর পিএইচডি গবেষণাকালে দক্ষিণ কোরিয়ায় সম্পন্ন হয়। জিয়াংসেং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (Gyeongsang National University) এর প্রফেসর ড. জং ইয়ং রুন এর সহযোগীতায় উক্ত গবেষণা সম্পন্ন হয়। সহায়ক গবেষক ড. আজমল খান, ড. ইউজিং প্রমুখ গবেষণায় সহযোগিতা করেন ।
উক্ত ব্যাকটেরিয়া দিয়ে দেশীয় আবহাওয়ায় উদ্ভিদ রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করা যাবে বলে বারির ঊধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হোসেন জানান।
১ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস